দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান বিশ্বে আধুনিক আপডেটেড মানুষ মানেই ভার্চুয়াল জগতে তার রয়েছে এক বা একাধিক অ্যাকাউন্ট। জিমেইল, ইয়াহু, হটমেইল তো আছেই, এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আর টুইটারেও একটা অ্যাকাউন্ট থাকা চাই। আর এতো এতো অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণ করতে গেলে বিপত্তিতে ফেলে পাসওয়ার্ড। পাসওয়ার্ড বড় হলে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি কম থাকে ঠিকই, কিন্ত সেটা মনে রাখাটাই বিশাল কষ্টের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ভুলে গেলে এতোদিনের প্রিয় অ্যাকাউন্টটি হারাবার সম্ভাবনা থাকে। অন্যদিকে ছোট পাসওয়ার্ডে থাকে হ্যাকারদের কবলে পড়ার সম্ভাবনা। তবে অ্যাকাউন্টধারীদের পাসওয়ার্ড সংক্রান্ত ঝক্কি ঝামেলার থেকে মুক্তি দেয়ার একটি সম্ভাবনা দেখালো প্রযুক্তি কোম্পানি মটরোলা। সম্প্রতি কোম্পানিটি এমন বিশেষ কিছু ট্যাটু এবং আহারযোগ্য ট্যাবলেটের প্রদর্শনী করেছে, যেগুলো মানুষের মস্তিষ্কের কাছ থেকে পাসওয়ার্ড মনে রাখার কাজটি নিয়ে নেবে। পাসওয়ার্ড টাইপ করা ছাড়াই যদি আপনার অ্যাকাউন্ট আপনাকে চিনে নেয়, তবে নিশ্চয়ই তা আপনার জন্যে বেশ আনন্দের ব্যাপারই হবে। মটরোলার এই প্রযুক্তি সে ব্যাপারটাকেই সম্ভব করতে যাচ্ছে।
মটরোলা স্পেশাল প্রজেক্টের বর্তমান প্রধান রেজিনা ডানকান সম্প্রতি তার অধীনে থাকা দুটি বিশেষ প্রজেক্টের প্রদর্শনী করিয়েছেন। সম্প্রতি প্রযুক্তি পণ্যের ওপর অনুষ্ঠিত ডি-১১ কনফারেন্সে এই প্রজেক্টগুলোর প্রদর্শনী করেন ডানকান। পাসওয়ার্ড মনে রাখার এবং অ্যাকাউণ্টে লগ ইন করার ঝক্কি ঝামেলা কমাতেই রেজিনা ডানকানের এই বিশেষ প্রজেক্ট। ডানকানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী একজন মধ্যম মানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টধারী দিনে গড়ে ৩৯ বার তার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করেন। পাসওয়ার্ড ছোটখাটো হলে এবং তা মনে থাকলে অন্তত প্রতিবার লগইন করতে নুন্যতম ২.৩ সেকেন্ড ব্যয় করতে হয় তাকে। ডানকানের প্রজেক্ট দুটি এই সময় কমিয়ে আনার পাশাপাশি পাসওয়ার্ড মনে রাখার ঝামেলা কমিয়ে আনবে। এছাড়া অ্যাকাউন্টকে দেবে সুরক্ষার নিশ্চয়তা। এই প্রজেক্ট দুটির একটি হলো বিশেষ ধরনের ইলেক্ট্রনিক ট্যাটু, যা গায়ে লাগালে সেটিই আপনার পাসওয়ার্ডের কাজ করবে। ডানকানের এই ট্যাটুতে থাকবে বিশেষ সেন্সর এবং অ্যান্টেনা, যা আপনার স্মার্টফোনকে আপনাকে সনাক্ত করতে সাহায্য করবে। তাই দীর্ঘ পাসওয়ার্ড টাই করার ক্লান্তি থেকে আপনাকে মুক্তি দিবে নিমেষেই। কেবল আপনার স্মার্টফোনে নতুন নতুন অ্যাপলিকেশন ডাউনলোড দিন, আর সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করুন এই ছোট বারকোড ট্যাটুটি।
ট্যাটুতে যাদের আপত্তি আছে, তাদের জন্য রয়েছে বিকল্প ব্যবস্থা। ডানকানের অন্য প্রজেক্টটি হলো একটি বিশেষ ধরনের ট্যাবলেট। ট্যাটুর মত এই ট্যাবলেটের কাজও হলো আপনার পাসওয়ার্ড হিসেবে কাজ করা। সাধারণ যে কোনো পিলের চেয়েও আকারে ছোট এই পাসওয়ার্ড পিলটি গলাধঃকরণের পর সেটি সরাসরি আপনার পাকস্থলিতে চলে যাবে। সেখানে পাকস্থলির এসিডের সঙ্গে পিলটি বিক্রিয়া করে উৎপন্ন করবে ১৮-বিটের ইসিজি তরঙ্গ। এই তরঙ্গটিই আপনার ফোনকে তার সঠিক ব্যবহারকারী চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে। আমেরিকার প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বিভাগের সাবেক এবং প্রথম নারী প্রধান ডানকানের দেয়া তথ্য মতে এই ট্যাবলেটটি প্রতিদিনের খাওয়া ভিটামিন ট্যাবলেটের মতই, তাই দেহের কোনো ক্ষতি করার সম্ভাবনাও কম। ট্যাবলেটটি যতক্ষণ আপনার দেহের ভেতরে থাকবে, ততক্ষণই আপনি নিজেই আপনার পাসওয়ার্ড হিসেবে কাজ করবেন। তবে প্রতিবার অ্যাকাউন্টে লগইন করার আগে একটা করে ট্যাবলেট গলাধঃকরণের চেয়ে নিশ্চয়ই ট্যাটু ব্যবহারই গ্রাহকের কাছে বেশি আরামদায়ক হবে। অন্তত ডানকান আপাতত তাই মনে করছেন।
তথ্যসূত্র: দি রেজিস্টার, গিক