দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের নেত্রী সু চির আন্তরিকতা নিয়ে সংশয় থাকায় পদত্যাগ করলেন এক মার্কিন কূটনীতিক। এই মার্কিন কূটনীতিকের নাম বিল রিচার্ডসন।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা প্যানেল হতে পদত্যাগ করলেন মার্কিন কূটনীতিক বিল রিচার্ডসন।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা প্যানেলটির সদস্য রিচার্ডসন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্যানেলের ভূমিকা এবং অং সান সু চি’র ‘সদিচ্ছা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্যানেলটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি এটিকে ‘লোক দেখানো’ বলে উল্লেখ করেন।
মিয়ানমার সরকার রিচার্ডসনকে এই প্যানেলে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। রিচার্ডসনের পদত্যাগের পর এখনও মিয়ানমার সরকারের কোনো রকম প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
বিল রিচার্ডসন অভিযোগ করেন যে, রোহিঙ্গাদের দুর্দশার বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। তিনি অং সান সু চি’র ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনাও করেছেন।
একসময় ক্লিনটন প্রশাসনে কাজ করা এই অভিজ্ঞ কূটনীতিক আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে মিজ সু চি’র ‘নেতৃত্বে নৈতিকতারও ঘাটতি’ রয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিল রিচার্ডসন বলেছেন, সোমবার এক বৈঠক চলার সময় মিজ সু চি’র সঙ্গে তার কথা কাটাকাটিও হয়েছে।
সোমবারের ওই বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে রিপোর্ট করতে গিয়ে মিয়ানমারে আটক হওয়া রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের আটক হওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিল রিচার্ডসন।
এই প্রসঙ্গের অবতারণা করতে গিয়েই সু চি ‘ক্ষিপ্ত’ হয়ে যান এবং এই বিষয়ে কথা বলা ‘অ্যাডভাইজরি বোর্ডের কাজ নয়’ বলেও তিনি তাকে সাফ জানিয়ে দেন।
এই প্যানেল নামে মাত্র থাকলেও কাজের কাজ কিছু না করে মূলত সেদেশের সরকারকে তুষ্ট রাখা কিংবা মনোরঞ্জন করাই মূল উদ্দেশ্য বলে বিল রিচার্ডসন উল্লেখ করেছেন।
বিল রিচার্ডসনের ভাষায়, সরকারের জন্য ‘চিয়ার-লিডিং স্কোয়াড’ হিসেবে কাজ করবেন না বলে তিনি পদত্যাগ করেছেন।
অং সান সু চি উদ্যোগে গত বছর এই আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ড গঠন করে মিয়ানমার সরকার। এর উদ্দেশ্য ছিল রাখাইন রাজ্যের স্থিতিশীলতার জন্য সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা। ১০ সদস্য বিশিষ্ট এই উপদেষ্টা বোর্ডের ৫ জনই বিদেশী সদস্য।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান নির্যাতনের হাত হতে বাঁচতে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমারে যে নৃশংসতা চলছে, সেটিকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নিধনের একটা ধ্রুপদী উদাহরণ’ হিসেবে বার বার বর্ণনা করে আসছে।