দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইয়াসির আরাফাতকে হত্যা করা হয়েছিল ইসরায়েলের বিষেই! নতুন একটি বই ‘রাইজ অ্যান্ড কিল ফার্স্ট’ এ এমন তথ্য উঠে এসেছে। ইতিপূর্বে এই অভিযোগ উঠলেও ইসরায়েল তা বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে এসেছে।
নতুন একটি বইয়ে তথ্য উঠে এসেছে যে, ইসরায়েল বিকিরণ বিষক্রিয়ার আশ্রয় নিয়েছিল ফিলিস্তিনের নেতা ইয়াসির আরাফাতকে হত্যা করার জন্য। ইতিপূর্বেও এমন অভিযোগ উঠলেও ইসরায়েল বরাবরই তা প্রত্যাখ্যান করে এসেছে।
ইসরায়েলের তেল আবিবে প্রকাশিত দৈনিক ইদিয়ত আহারোনত পত্রিকার গোয়েন্দাবিষয়ক প্রতিনিধি রনেন বার্গম্যান ‘রাইজ অ্যান্ড কিল ফার্স্ট’ নামের ওই বইটি রচনা করেছেন। বইটির জন্য তিনি ইসরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ, নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেত এবং সেনাসদস্যদের পিছু ছুটেছেন, তাদের সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন। সাক্ষাৎকার দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক এবং এহুদ ওলমার্টও রয়েছেন বলে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
এক হাজার সাক্ষাৎকার ও হাজারো নথিপত্রের ওপর ভিত্তি করে রনেন রচনা করেছেন ৬ শতাধিক পৃষ্ঠার ‘রাইজ অ্যান্ড কিল ফার্স্ট’ নামে ওই বইটি।
ইরানের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধের অংশ হিসেবে ইসরায়েল দেশটির ৬ হতে ৭ জন পরমাণুবিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে বলে জানানো হয়েছে ওই বইটিতে। শুধু তা-ই নয়, শত্রুকে ঘায়েল করতে ইসরায়েলের গুপ্তচরেরা কখনও কখনও টুথপেস্টে বিষপ্রয়োগ করেছেন। আবার কখনও ড্রোন হামলা চালিয়েছে সেনারা। মুঠোফোন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বা দূরনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় যানবাহনের টায়ার ফুটো করেও নিজেদের ছায়াযুদ্ধ জয়ের চেষ্টা করেছে দেশটি। বিপক্ষের নেতাকে ঘায়েল করতে তারা গোপন প্রণয়ের খবর বের করতেও কার্পণ্য করেননি ইসরায়েলের গুপ্তচররা। ‘রাইজ অ্যান্ড কিল ফার্স্ট’ বইয়ে দাবি করা হয়েছে যে, ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টির পর গত ৭০ বছরে দেশটি ওইসব কুট-কৌশলগুলো ব্যবহার করে অন্তত ২ হাজার ৭০০ অভিযান চালিয়েছে। যদিও এর অনেকগুলোই ব্যর্থ হয়েছে।
বলা হয়েছে, ২০০৪ সালে ফিলিস্তিনের নেতা ইয়াসির আরাফাতের মৃত্য নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনায় অপারগতা প্রকাশ করেছেন বার্গম্যান। তার ভাষ্য হলো, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর তৎপরতার কারণে তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারছেন না।
বইটির লেখক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, ‘রাইজ অ্যান্ড কিল ফার্স্ট’ বইটির শিরোনাম বেছে নেওয়া হয়েছে প্রাচীন ইহুদি সাহিত্যের প্রবাদ হতে। সেই প্রবাদটি হলো, ‘যদি কেও তোমাকে হত্যা করতে আসে, তাহলে রুখে দাঁড়াও ও তাকেই প্রথম হত্যা করো।’ রনেন বার্গম্যান বলেন, যে ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার তিনি নিয়েছেন, নিজেদের কাজের বৈধতার জন্য মূলত এই প্রবাদটিই আওড়েছেন তারা!
‘রাইজ অ্যান্ড কিল ফার্স্ট’ বইতে আরও জানানো হয়েছে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশও ইসরায়েলের বহু কৌশল অবলম্বন করেন। আবার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও একই কৌশলে বহু অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন।