দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেকেই কবুতর পালি। কবুতরকে আমরা আদর-সোহাগ করে লালন-পালন করি। কিন্তু এই কবুতরের সংস্পর্শ মৃত্যু হতে পারে! এমন খবরে সকলেই হতবাক।
আমাদের দেশে শখ করে কবুতর পালেন এমন মানুষ রয়েছে বহু। দৈনন্দিন জীবনে তাদের যত্ন করতে তারা নানাভাবে কবুতরের সংস্পর্শে চলে আসেন। তবে নতুন একটি তথ্য হলো, এই কবুতরের সংস্পর্শই নাকি আপনার শরীরে নানা অসুখের কারণ হতে পারে! এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে আপনার!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, সম্প্রতি গ্লাসগোতে একটি হাসপাতালে এক শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছে কবুতরের বিষ্ঠার সঙ্গে সম্পর্কিত এক ধরনের প্রদাহকে।
প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে একটি সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয় এক শিশু। হাসপাতালে থাকা অবস্থাতেই কবুতরের বিষ্ঠা হতে ‘ক্রিপটোকক্কাস’ নামক এক ধরনের ছত্রাক সংক্রমণ ঘটে শিশুটির শরীরে। সেটি থেকে দেখা দেয় নতুন ধরনের এক অসুখ। কবুতরের বিষ্ঠার সংস্পর্শে আসা মাটিতেও এটি পাওয়া যায়।
হাসপাতালের যে ঘরে শিশুটিকে রাখা হয় সেটির খুব ছোট একটি ছিদ্র হতে কবুতরের বিষ্ঠা সম্ভবত ঘরে প্রবেশ করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই প্রদাহ হতে শিশুটির মৃত্যু ঘটেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই নির্দিষ্ট প্রদাহটি অবশ্য মানুষ হতে মানুষে ছড়ায় না।
শুধু ছত্রাক সংক্রমণই নয়, কবুতরের বিষ্ঠা হতে মানবদেহে আরও কয়েকটি অসুখ হতে পারে। যেমন এক ধরনের ফ্লুও হতে পারে যার একটি হলো ‘সিটাকোসিস’। জ্বর, মাথাব্যথা, ফুসকুড়ি এগুলো এই রোগের সাধারণ লক্ষণ। অনেক সময় নিউমোনিয়া পর্যন্তও গড়াতে পারে এই সমস্যাটি হতে।
ফ্লু হতে ফুসফুসের একটি প্রদাহ হতে পারে যার নাম হলো ‘হিসটোপ্লাসমোসিস’। সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত হতে পারে মানবদেহ যা হতে সাধারণত ডাইরিয়া হয়।
বিশেষ করে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম বা যারা এই শিশুটির মতো ইতিমধ্যেই কোনো শারীরিক সমস্যায় দুর্বল তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। তাছাড়া শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও থাকে কম।
খবরে বলা হয়েছে যে, সাধারণত দেখা যায়, কবুতরের বিষ্ঠা পরিষ্কার করতে গিয়েই সবচাইতে বেশি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাটি ঘটে। বিষ্ঠা পরিষ্কারের সময় সেখানকার বাতাসে তার যে কণা ভেসে বেড়ায় সেটি নি:শ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে। কবুতরকে খাওয়াতে গিয়ে বা আদর করতে গিয়ে বিষ্ঠা গায়ে লেগেও আক্রান্ত হতে পারেন এই অসুখে।
যে কারণে কবুতরের খাঁচায় খুব বেশি বিষ্ঠা জমতে না দেয়াই উচিত। কবুতরের ঘর পরিষ্কার করার সময় অবশ্যই নাক-মুখ কিছু দিয়ে ঢেকে নিতে হবে। যদি শরীরের সঙ্গে কবুতর বা অন্য পাখির বিষ্ঠার সংস্পর্শ হয় তবে খুব সাবধানের সঙ্গে তা পরিষ্কার করতে হবে। মোট কথা কবুতর যারা পালেন তাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে। কারণ রোগ কারও কখনও আপন হয়না।