দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কয়েকজন মিলে নিখাদ প্রাকৃতিক পরিবেশে তাবু গেঁড়ে আড্ডা মুখর রাত্রিযাপন, নানারকম পাখি এবং অজানা পোকার শব্দ মনকে এক অদ্ভুত প্রশান্তি দেয়। আর সেটিই হলো ক্যাম্পিং। আজ রয়েছে এর ২য় খণ্ড।
নগরের যান্ত্রিকতার বাইরে গিয়ে নৈস্বর্গিক পরিবেশে একটি রাত কাটানোর মুহূর্ত আপনাকে দিবে অনাগত দিনে প্রাণবন্ত থাকার এক রসদ।
বাংলাদেশে শীতকাল হলো ক্যাম্পিংয়ের জন্য সবচেয়ে আদর্শ সময়। “কোথায় ক্যাম্পিং করবো?” এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তবে বাস্তবতা হলো, আপনার পছন্দ এমন কোনো স্থানে আপনি ক্যাম্পিং করতেই পারেন। সাধারণত চর, নদীর তীর, সাগর পাড়, ঘন ঝাউ বন বা বিলের আশেপাশের এলাকাগুলো ক্যাম্পিংয়ের জন্য খুব বেশি জনপ্রিয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশে ক্যাম্পিংয়ের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি স্থান সম্পর্কে। আজকে রয়েছে ২য় খণ্ডটি।
কুতুবদিয়া দ্বীপ
কুতুবদিয়া দ্বীপটি অবস্থিত কক্সবাজারে। নানা রকম বৈচিত্রে ভরা ২১৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের কুতুবদিয়া হলো কক্সবাজারের একটি দ্বীপ উপজেলা। এই দ্বীপে অবস্থিত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র, সমুদ্র সৈকত, লবণ চাষ, বাতিঘর ও কুতুব আউলিয়া (রহ.) মাজার। নিরিবিলি সৈকতের ক্যাম্পিং করার জন্যে অনেকেই এই দ্বীপকে বেছে নেন। নিরাপত্তা নিয়ে এখানে কোনে রকম সংশয় নেই।
তিন্দু
এটি বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলায় অবস্থিত। তিন্দুকে বাংলাদেশের ভূ-স্বর্গ হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। মেঘ, নদী, পাহাড়, ঝর্ণা এবং রোমাঞ্চ এই সবকিছু মিলিয়ে অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ভ্রমণকারীদের কাছে এক রহস্যের নাম তিন্দু। শঙ্খ নদীর তীরে তিন্দুর অসাধারণত্ব দেখতে দেখতে আপনি অনায়াসে একটি রাত কাটিয়ে দিতে পারবেন। এখানে ক্যাম্পিং করতে চাইলে প্রয়োজনীয় সবকিছুই আপনাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে।
সন্দ্বীপ
চট্টগ্রামের মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত দ্বীপ উপজেলা হলো এই দ্বীপ যার নাম সন্দ্বীপ। অবারিত সবুজ মাঠ, নদীর বুকে জেগে উঠা চর বা দ্বীপের সহজ সরল মানুষ, এক কথায় এই দ্বীপের সবকিছুই ভালো লাগার মতো স্থান এটি। এছাড়াও সাগর নদী পরিবেষ্টিত এই দ্বীপে দেখার মতোই বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে। ক্যাম্পিং করার জন্যে সন্দ্বীপের পশ্চিম দিকে হলো নদী পাড় (রহমতপুর) সবচেয়ে আদর্শ একটি স্থান।
হাজারিখিল অভয়ারণ্য
দেখা যায় অনেক সময় ক্যাম্পিং গিয়ারের কারণে চাইলেও নিঝুম বনের বৈচিত্রতায় রাত্রিযাপন থেকে নিজেকে বঞ্চিত করতে হয়। তবে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির হাজারিখিল অভয়ারণ্যে ক্যাম্পিংয়ের বিভিন্ন উপকরণ ভাড়ায় পাওয়া যাবে। নিজের ক্যাম্প গিয়ার থাকলেও আপনি চাইলেই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় সাহায্য নিতে পারবেন।
নাফাখুম
নাফাখুম হলো বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম বড় জলপ্রপাতের নাম। বাংলার নায়াগ্রা খ্যাত এই নাফাখুমের দ্রুত গতিতে নেমে আসা পানির জলীয় বাষ্পে সূর্য্যের আলোয় রংধনু খেলা করে। নাফাখুম যেতে হলে অবশ্যই আপনাকে একজন গাইডের সাহায্য নিতে হবে। সেই সঙ্গে ক্যাম্পিংয়ের যাবতীয় উপকরণও নিতে হবে।
চর কুকরী মুকরী
ভোলা জেলা শহর হতে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপাসাগরের কোল ঘেষা মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত চর হলো এই চর কুকরী মুকরী। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসাবে সুপরিচিত। এই চরের বালুর ধুম নামক স্থানে কক্সবাজার/কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের আবহ পাওয়া যাবে। চর কুকরি মুকরির নিরিবিলি এবং পরিছন্ন সমুদ্র সৈকত হতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্থের অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করা সম্ভব। শীতকালে এখানে ক্যাম্পিং করার জন্য উপযুক্ত একটি সময়।
মহামায়া লেক
চট্রগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম কৃত্রিম হৃদ মহামায়াতেও রয়েছে ক্যাম্পিংয়ের বিশেষ সুযোগ। কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে ক্যাম্পিংয়ের জন্য বুকিং দিতে পারবেন আপনি। সর্বোচ্চ ৩০ জন হতে সর্বনিন্ম ৪ জন ক্যাম্পিং করতে পারবেন এই স্থানে। সেই সেঙ্গ রয়েছে লেকের পানিতে সাতার কাটা ও কায়াকিংয়ের ব্যবস্থাও।
তথ্যসূত্র: https://vromonguide.com