দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বার বার কঠিন কঠিন ভাইরাসের কবলে পড়ছে চীনের নাগরিকরা। এবার চীনে বুনিয়া নামে নতুন ভাইরাসের হানার খবর পাওয়া গেছে। এতে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, সংক্রামিত হয়েছেন ৬০ জন।
চীনের উহান হতে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস সামলাতে গোটা দুনিয়া হিমশিম খাচ্ছে। ইতিমধ্যেই পুরো বিশ্বে ৭ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বে এক কোটি ৮০ লাখের উপর আক্রান্ত। এর মধ্যেই আবার নতুন ভাইরাসের উৎপাত শুরু হয়েছে চীনে।
বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, বিশেষ এক ধরনের রক্তচোষা পোকার কামড় হতে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাসের সংক্রমণ। চীনের নতুন এই ভাইরাসে ইতিমধ্যেই ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারিভাবে নিশ্চিত করা হয়। সংক্রমিতের সংখ্যা ৬০ ছাড়িয়েছে।
চীনের গ্লোবাল টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশ এ পর্যন্ত ৩৭ জনের শরীরে নয়া SFTS ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা সম্ভব হয়। এই ভাইরাসের কমন লক্ষণের মধ্যে হলো জ্বর, সর্দিকাশি, সেইসঙ্গে লিউকোসাইটের সংখ্যা হ্রাস। যাকে মূলত একসঙ্গে বলা হচ্ছে SFTS।
অপরদিকে, পূর্ব চীনের আনহুই প্রদেশেও আরও ২৩ জন নতুন এই ভাইরাসে আক্রান্ত। কোভিড ভাইরাসের মতো নয়া SFTS ভাইরাস প্রাণঘাতি কি না, তা এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্তরেই রয়েছে। তবে কোভিড হতে শিক্ষা নিয়ে এবার আর গাছাড়া কোনো মনোভাব দেখাচ্ছে না চীন। বিশেষত: ৭ জনের প্রাণহানির উপর।
জিয়াংসু প্রদেশের রাজধানী নানজিংয়ের এক আক্রান্ত নারী জ্বর-সর্দির মতো সাধারণ উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান। জ্বর না-কমায় চিকিৎসকেরা রক্তপরীক্ষা করান।
তখন রক্ষ পরীক্ষার পর দেখা যায়, লিউকোসাইট কমে গিয়েছে। প্লেটলেটের সংখ্যাও স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। হাসপাতালে রেখে এক মাসের উপর চিকিৎসা চালানো হয়। তার পরেই ওই নারী সুস্থ হয়ে ওঠেন। পরে জানা যায় যে, ওই নারী নতুন এক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
গ্লোবাল টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়, আনহুই এবং জিয়াংসু প্রদেশে নয়া ভাইরাসের সংক্রমণে এ পর্যন্ত ৭ জন মারা গেছেন। যদিও চীনের ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, SFTS ভাইরাস (SFTS Virus) আদতে নতুন ভাইরাসই নয়।
২০১১ সালেই এই ভাইরাসের প্যাথোজেনকে পৃথক করা হয়েছিলো। এটি বুনিয়াভাইরাস (Bunyavirus)-এর ক্যাটেগরিতেই পড়ছে।
ভাইরোলজিস্টদের ধারণা মতে, বিশেষ এক ধরনের রক্তচোষা পোকার কামড় থেকেই মানুষের শরীরে এই ভাইরাস সংক্রামিত হয়ে থাকে। তবে মানুষ থেকে মানুষের শরীরেও সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
রক্ত বা মিউকাস থেকে ছড়িয়ে পড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনাও রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন চীনের ঝিজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের চিকিৎসক শেং জিফাং।
চিকিৎসকরা সতর্ক করে জানিয়েছেন যে, পোকার দংশনই হলো প্রধান সংক্রমণ রুট। তাই একটু সাবধানেই থাকতে হবে। তবে এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তারা মনে করেন, এই বুনিয়াভাইরাস নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হয়ে পড়ার মতো কোনো কিছু ঘটেনি।
তথ্যসূত্র: এই সময়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।