দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কাল থেকে দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে এক সপ্তাহের লকডাউন। করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। জেনে নিন লকডাউনে যা যা বন্ধ থাকবে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে লকডাউনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। গতকাল (৩ এপ্রিল) সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, আগামী সোমবার হতে দেশে এক সপ্তাহের লকডাউন চলবে। একই দিন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে ৭ দিনের লকডাউনের আদেশ জারি হতে পারে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত আদেশে যেদিন থেকে লকডাউন শুরু হবে সেদিন হতেই অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
লকডাউনে আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) সকাল ৬টা হতে যাত্রীবাহী নৌযান (লঞ্চ) চালাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডোর গোলাম সাদেক।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা যাত্রীবাহী নৌযানগুলো সোমবার সকাল ৬টা হতে বন্ধ করে দিচ্ছি। যতোদিন লকডাউন চলবে, ততোদিন বন্ধ থাকবে। তবে পণ্যবাহী নৌযান চলাচল অব্যাহত থাকবে।’
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী সোমবার (৫ এপ্রিল) হতে এক সপ্তাহের জন্য সারা দেশ লকডাউন থাকবে। এই সময় জরুরি খাদ্য ও পণ্যবাহী ট্রেন ছাড়া সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউনে অন্যান্য পরিবহনের মতো যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি খাদ্য এবং পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, ‘লকডাউন চলাকালে শুধু জরুরি সেবা দেবে সেই ধরনের প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। শিল্প কলকারখানা খোলা থাকবে, যাতে করে শ্রমিকরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে ও বিভিন্ন শিফটিং ডিউটির মাধমে যাতে করে তারা কলকারখানায় কাজ করতে পারেন।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন যে, আমাদের জরুরি সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান, ডিসি অফিস, ইউএনও অফিস, ফায়ার সার্ভিস, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অফিস, সংবাদপত্র অফিস- এই ধরনের অফিসগুলো খোলা থাকবে।
সব ধরনের মার্কেট বন্ধ থাকবে জানিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, সরকারি এবং বেসরকারি অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।