দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী টিকাপ্রত্যাশীদের জন্য নিবন্ধনের ন্যূনতম বয়স পুনর্নির্ধারণ করা হচ্ছে। নতুন বয়সসীমায় ৩৫ বছর বয়সীরা টিকা প্রাপ্তির জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদেরও টিকা দেওয়া হবে।
এদিকে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে পাওয়া মডার্নার টিকা সংরক্ষণে বেশ জটিলতা রয়েছে। যে কারণে সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে টিকা ব্যবস্থাপনার এক সভায় এই গ্রহণ করা সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
মহাপরিচালক জানিয়েছেন, বর্তমান ব্যবস্থায় চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা করোনার টিকা প্রাপ্তির জন্য নিবন্ধন করতে পারছেন। এটি এবার কমিয়ে আনা হয়েছে। ৩৫ বছরের ব্যক্তিরাও নিবন্ধন করতে পারবেন। আবার নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কৃষক-শ্রমিকদেরও যুক্ত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৪৫ হাজার শিক্ষার্থীর পাওয়া তালিকা তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগকে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই এই নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা প্রতিরোধী টিকা বণ্টনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বে গড়ে ওঠা কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি হতে পাওয়া ২৫ লাখ মডার্নার টিকা সংরক্ষণ জটিলতার কারণে সিটি করপোরেশনের বাইরে দেওয়া হবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার এই টিকা মাইনাস ১৫ থেকে মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা লাগে। দেশের সব জেলায় এই সুবিধা না থাকার কারণে মডার্নার টিকা সিটি করপোরেশনের বাইরে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ যারা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ও বয়সসীমা অনুযায়ী নিবন্ধন করবেন তারা এই টিকা পাবেন।
কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হতে মডার্নার ২৫ লাখ ডোজ এবং বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় ২০ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা চলতি সপ্তাহে দেশে এসেছে। বর্তমানে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার এবং সিনোফার্মের টিকার প্রয়োগ চলছে। নতুন এই টিকা চলমান কর্মসূচিতে যুক্ত হবে।
মডার্নার টিকা প্রয়োগ ১০ দিনের মধ্যে শুরু হতে পারে সেইকথা জানিয়ে অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘যিনি যে কেন্দ্রে নিবন্ধন করবেন তিনি নির্দিষ্ট কেন্দ্রেই টিকা নিতে পাবেন। কেও মডার্নার টিকা নিতে চাইলে তাকে অবশ্যই সিটি করপোরেশন এলাকায় নিবন্ধন করতে হবে।’
উল্লেখ্য, দেশে এই পর্যন্ত ৮টি টিকাকে জরুরি প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া টিকাগুলো হলো ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড, চীনের সিনোফার্ম, রাশিয়ার স্পুতনিক-৫, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার এবং মডার্না, চীনের সিনোভ্যাক, বেলজিয়ামের জনসন অ্যান্ড জনসন ও সুইডেনের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।