দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময় ঘরে ঘরে এই ফ্যাটি লিভার অসুখের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এই ফ্যাটি লিভার অসুখটি নিয়ে সময় থাকতে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
কখন যে এই অসুখটি সকলের অজান্তেই সিরোসিসের দিকে মোড় নেবে, তা কিন্তু কেওই জানেন না। তাই রোগের ঝুঁকি সম্পর্কে প্রথম থেকেই সাবধান হতে হবে।
মূলত ফ্যাটি লিভার হলো একটি নীরব ঘাতক। তারপরও অসুখটি নিয়ে একেবারেই সচেতনতা নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই রোগটি কোনো এক সময় ভিতর ভিতর বাড়তে থাকে। এমনকি লিভার সিরোসিসে গড়াতে পারে। তাই চেষ্টা করতে হবে যতো দ্রুত সম্ভব এই অসুখের ঝুঁকি সম্পর্কে জেনে নিয়ে সচেতন থাকা।
লিভারে ফ্যাট জমা কোনও রকম কাজের কথায় নয়। অতিরিক্ত ফ্যাট লিভারে প্রদাহ তৈরিও করতে পারে। তাই এই অঙ্গটি নিজের কাজ করতে পারে না। যকৃত নিজের কাজে অপারগ হলে তখন শরীরে জমতে থাকে টক্সিন। এমনকী হজম প্রক্রিয়াও ব্যাহত হয়, কিছু উৎসেচক বের হতে পারে না।
তবে প্রথম থেকেই যদি সচেতন থাকতে পারেন, তাহলে এই অসুখ বেশিদূর হয়তো যেতে পারে না। এমনকি রোগ প্রতিরোধ করাও সম্ভব হবে। যদিও রোগ থেকে বাঁচতে চাইলে কয়েকটি নিয়ম সম্পর্কে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সমাজের সকল স্তরেই এই অসুখ নিয়ে আপনাকে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এই রোগের ঝুঁকির কারণ থেকে যাতে করে দূরে থাকা যায়, তা নিশ্চিত করাও দরকার। তবেই ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসবে।
ওজন বাড়া সমস্যার ভ্রুকুটি
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক জানিয়েছে, ওজন বেশি থাকাটাও ফ্যাটি লিভার ডিজিজের অন্যতম একটি কারণ। ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার অর্থই হলো শরীরে মেদের বহর বেড়ে যাওয়া। সেই মেদ অনেক ক্ষেত্রেই যকৃতেও জমে। তখনই এই অসুখটি হয়। তাই মেদ অবশ্যই কমাতে হবে। বিশেষত: সেন্ট্রাল ওবেসিটি কিংবা যাকে বলা হয় ভুঁড়ি কমানো প্রয়োজন। এক্ষেত্রেও দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। ভালো হবে এরোবিকস এক্সারসাইজ, যেমন- সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা ইত্যাদির সাহায্য নেন।
ডায়াবেটিস রোগীরা সাবধান
মূলত ডায়াবেটিস একটি ভয়াবহ অসুখ। এই রোগ থেকে বহু সমস্যা আসতে পারে। এমনকী দেখা গেছে যে, টাইপ ২ ডায়াবেটিস থাকলে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। প্রকৃতপক্ষে ডায়াবেটিস রোগীদের থাকে ইনসুলিন রেজিস্টেন্স। অর্থাৎ তাদের শরীরে ইনসুলিন ঠিকমতো কাজই করতে পারে না। সে কারণে অনেক সময়ই মেদ জমে যায় লিভারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অন্যথায় জটিলতা আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে।
প্রধান ঝুঁকি মদ্যপান
ফ্যাটি লিভার অসুখটির মূল ঝুঁকির কারণই হলো মদ্যপান। যে সকল ব্যক্তি এই পানীয় বেশি পরিমাণে গলায় ঢালেন, তাদের যকৃতে সমস্যা হয়। প্রকৃতপক্ষে মদ্যপান সরাসরি লিভারের ক্ষতি করে। এমনকি লিভারের প্রদাহের কারণও হতে পারে।
কিছু ওষুধ খেলেও ঝুঁকি বাড়তে পারে
কিছু ওষুধ রয়েছে যা এই অসুখের ঝুঁকি আরও বাড়ায়তে পারে। যেমন অ্যামিওডারোন, ডিলটিয়াজেম, ট্যামোক্সিফেন এবং বিভিন্ন স্টেরয়েড। এই ওষুধগুলো চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়।
বিপদের নাম মেটাবলিক সিনড্রোম
ডায়াবেটিস ছাড়াও বিভিন্ন বিপাকীয় অসুখও রয়েছে। এমন কয়েকটি অসুখই হলো হাই কোলেস্টেরল, হাই ট্রাইগ্লিসারাইডস, হাই ব্লাড প্রেশার ইত্যাদি। দেখা গেছে, এই ধরনের মেটাবলিক সিনড্রোমগুলো থাকলে শরীরে বিপাকক্রিয়া সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। তাই লিভারে ফ্যাট জমার আশঙ্কাও তৈরি হয়। তাই উপরিউক্ত একটি অসুখ থাকলেও অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এই নিয়মগুলো মেনে চললে তবেই ফ্যাটি লিভার থেকে বাঁচতে পারবেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।