দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কিডনি হলো মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই অঙ্গটি বিকল হলে মানুষের জীবন নিয়ে টানাটানি পড়ে যায়। তাহলে সেই কিডনিকে সুস্থ সবল রাখতে চান? তাহলে যতো দ্রুত সম্ভব কয়েকটি টিপস মেনে চলুন। এতেই পাবেন উপকার।
আপনাকে একবার কিডনির অসুখের ফাঁদে পড়লে ভুগতে হবে সারাজীবন, তাই বিপদ ঘটার আগেই মেনে চলুন কয়েকটি নিয়ম।
আমাদের শরীরের অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো কিডনি। এই অঙ্গটি প্রস্রাব তৈরি থেকে শুরু করে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ ও কিছু জরুরি হরমোন তৈরির কাজও একা হাতে সামলিয়ে থাকে। তাই কিডনির সুস্থ থাকাটা খুবই জরুরি।
তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, শেষ কয়েক দশকে কিডনি ডিজিজে আক্রান্ত রোগীর সংখ্য়া বেশ কয়েকগুণ বেড়েছে। এমনকী বর্তমানে বয়স মাত্র ৪০ পেরনোর পরই অনেকেই ক্রনিক কিডনি ডিজিজে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে সকলকেই কিডনি নিয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন।
তাই দেরি না করে কিডনি ডিজিজ প্রতিরোধের কয়েকটি ‘গোল্ডেন রুল’ সম্পর্কে আজ জেনে নিন। এতে করে নির্দিধায় বলা যায়, এই কয়েকটি পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলে আপনার কিডনি থাকবে একেবারে ফিট।
ব্লাড প্রেশার
হাই ব্লাড প্রেশারটি কিডনিকে একা হাতে শেষ করে দিতে পারে। তাই বৃক্ককে সুস্থ-সবল রাখতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই রক্তচাপকে স্বাভাবিকের গণ্ডিতেই আটকে রাখতে হবে। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ কোনও দুরূহ কাজই নয়। বরং চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি ডায়েট এবং লাইফস্টাইলে কয়েকটি পরিবর্তন আনতে পারলেও এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এছাড়াও দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা বাধ্যতামূলক। এই নিয়মগুলো মেনে চললে সুস্থ থাকতে পারবেন। যে কারণে কিডনি থাকবে রোগমুক্ত।
ব্লাড সুগারে লাগাম টানুন
বিশ্বের সব স্থানেই হাই ব্লাড সুগার বা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গাণিতিক হারে বেড়েই চলেছে। আগামীদিনে পরিস্থিতি যে আরও জটিল দিকেই যাবে, এটিও জানিয়ে রেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে ডায়াবেটিস নিয়ে সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে।
কারণ হলো, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে তখন কিডনিকে অধিক পরিশ্রম করতে হয়। সে কারণেই ক্রনিক কিডনি ডিজিজের খপ্পরে পড়েন অনেক ডায়াবেটিস রোগী। তাই সময় থাকতে ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি বলে জানিয়েছে কিডনি.ওআরজি।
চোখ রাখুন ডায়েটের দিকে
কিডনির অসুখের ফাঁদ থেকে নিজেকে বাঁচাতে চাইলে আপনাকে ডায়েটের দিকেই বেশি নজর দিতে হবে। এক্ষেত্রে এমন খাবার পাতে রাখতে হবে যা সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরলসহ একাধিক সমস্যাকে আরও কন্ট্রোলে রাখতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা বেশি পরিমাণে তাজা ফল, শাক এবং সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও নিয়মিত হোল গ্রেইন, কম ফ্যাটযুক্ত মাছ, ডিম ও চিকেনও খেতে হবে। তাহলেই কিডনিকে সুস্থ রাখতে পারবেন।
দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম অত্যাবশ্যক
আপনার শত ব্যস্ততা থাকলেও দিনে মাত্র ৩০ মিনিট সময় বের করে হলেও ব্যায়াম করতে হবে। বিশেষ করে হাঁটা, সাইকেল চালানো, জগিং করার মতো এরোবিক এক্সারসাইজ করতে পারলে সবচেয়ে বেশি লাভ হবে। এতে করে নিয়ন্ত্রণে থাকবে সুগার, প্রেশার ও কোলেস্টরলের মতো ঘাতক অসুখ। এই অসুখগুলো নিয়ন্ত্রণে থাকলে যে কিডনির রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে, তা পৃথকভাবে বলতে হবে না।
ধূমপান একেবারেই না
ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমাদের কম বেশি সবার জানা। শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গের উপরই এর ক্ষতিকর প্রভাব বিদ্যমান। সেই তালিকা থেকে বাদ যায় না কিডনি। তাই কিডনি রোগ এড়াতে চাইলে ধূমপান বন্ধ করতে হবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org