দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে কয়েকটি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ হলো ওইসব খাবার ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই ইউরিক অ্যাসিড থাকলে কিছু খাবার না খাওয়াই উত্তম।
সাম্প্রতিক সময় ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা যেনো বেড়েই চলেছে। বয়স বাড়লে যেমন হয়, তেমনি কমবয়সিদের মধ্যেও এই সমস্যা ইদানিং দেখা যাচ্ছে। ডায়াবেটিস, আথ্রাইটিসের মতো ইউরিক অ্যাসিডও স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা হয়ে দেখা দিচ্ছে।
মূলত এই ইউরিক অ্যাসিড হলো একটি যৌগ। শরীরে কতোটা পরিমাণ ইউরিক অ্যাসিড থাকবে, তা পুরোপুরি নির্ভর করে খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ ও বিপাকহার কেমন, তার উপরে। চিকিৎসকরা মনে করেন, রক্তে এই অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে না পারলে ভবিষ্যতে নানা ধরনের রোগ আরও জাঁকিয়ে বসতে পারে। ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে ঝুঁকি তখন আরও দ্বিগুণ হয়। সুস্থ থাকতে তাই খাওয়া-দাওয়ায় রাশ টানতে হবে। ইউরিক অ্যাসিড কমাতে কিছু খাবার অবশ্যই নিয়ম করে খেতে হবে, কারণ কিছু খাবার ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই ইউরিক অ্যাসিড থাকলে কিছু খাবার না খাওয়াই উত্তম।
প্রোটিনে সমৃদ্ধ খাবার
ওজন কমানোর জন্য প্রোটিন উপকারী সেটি ঠিক, কিন্তু ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের প্রোটিনে সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলাটা জরুরি। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের পরিমাণও কমাতে হবে। সামুদ্রিক মাছ, মুরগির মাংসের বদলে বেশি করে ফল খান, সবুজ শাক-সব্জি। নিয়ন্ত্রণে থাকবে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও।
তেঁতুল
আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জানেন না যে, তেঁতুল আরও বাড়িয়ে দিতে পারে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলটি স্বাস্থ্যকর হলেও ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভোগা রোগীদের জন্য মোটেও উপকারী নয়। প্রতি ১০০ গ্রাম তেঁতুলে ফ্রুকটোজের পরিমাণ রয়েছে ১২.৩১ গ্রামের মতো। যা ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণে বাড়িয়ে দিতে যথেষ্ট।
স্যাচুরেটেড ফ্যাট
যেসব খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে, এমন খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন। এই ধরনের ফ্যাট ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের জন্য একেবারেই ভালো নয়। স্যাচুরেটেড ফ্যাট যতো বেশি পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করবে, ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা ততোই বৃদ্ধি পেতে থাকে। সুস্থ থাকতে রেড মিট, উচ্চ ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত খাবারও পাতে না রাখা ভালো। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org