দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ধূমপান না করলেও শরীরে ক্যান্সার থাবা বসাতে পারে। ধূমপান করেন না বলে যে, আপনি এই রোগ থেকে সুরক্ষিত রয়েছেন এমনটি কিন্তু নয়। নিজেকে সুরক্ষিত রাখার পদ্ধতি জেনে নিন।
পুরো বিশ্বে দিনে দিনে বাড়ছে ফুসফুসে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে যারা ধূমপান করেন তাদের এই ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা বেশি থাকে। তবে ধূমপান না করলেও এই মারণরোগ থাবা বসাতে পারে মানব শরীরে। ধূমপান করেন না বলেই যে আপনি এই রোগ থেকে সুরক্ষিত রয়েছেন- এমনটি কিন্তু নয়। নিজেকে সুরক্ষিত রাখার পদ্ধতি জেনে নিন।
# নিজে ধূমপান না করলে একজন ধূমপায়ীর সংস্পর্ষে থাকলে অর্থাৎ পরোক্ষ ধূমপানের কারণেও এই রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। তাই সামনে কেও ধূমপান করলে তাকে বারণ করুন, অথবা আপনি সেখান থেকে সরে যান।
# কলকারখানা, যানবাহনের ধোঁয়া, বাতাসে মিশে থাকা নানা রকম ক্ষতিকর রাসায়নিকের কারণেও এই রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। নিকেল, ক্রোমিয়াম, অ্যাসবেসটস, আর্সেনিকসহ নানা মৌল দূষিত বাতাসে অবাধে ভেসে বেড়ায়। এইসব মৌলের কারণেও ফুসফুসের ক্যান্সার হানা দিতে পারে। ফুসফুসে ক্যান্সার রোগের ঝুঁকি কমাতেও মাস্ক পরার অভ্যাস করতে পারেন।
# পরিবারে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী থাকলেও আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। জিনগত মিউটেশনের কারণেও অনেক সময় ক্যান্সার হয়। তাই পারিবারিক ইতিহাসে ক্যান্সার থাকলে নিয়মিত পরীক্ষা করানোটা জরুরি।
# আপনার আশেপাশে কোনো কারখানা রয়েছে, বা রাস্তার ধারে বাড়ি থাকলে বাড়িতে এয়ার পিউরিফায়ার লাগানো দরকার। ঘরে রেডন গ্যাসের মাত্রা পরীক্ষা করান বছরে অন্তত দু’বার। এই গ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকারকও বটে।
# পেশাগত কারণেও অনেককেই ক্ষতিকর ধোঁয়ার শিকার হতে হয়। যেমন কারখানা-খনিতে কর্মরত কর্মীর, রাস্তায় পিচ ঢালাইয়ের কাজে নিযুক্ত কর্মী, রাসায়নিক তৈরির ল্যাবরেটরিতে কর্মরত কর্মীদের ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই এই সব কাজ করতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ধোঁয়া ও দূষণ রোধে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org