দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে চেপে বিশ্ব ভ্রমণের কথা আমরা আগেও দেখেছি কিন্তু তাই বলে ট্রাক্টরে চেপে এক দেশ হতে আরেক দেশে ভ্রমণের কথা আমরা আগে কখনও শুনিনি। এবার শোনা গেলো ট্রাক্টরে করে জার্মানি হতে রাশিয়া ভ্রমণের কথা তাও খেলা দেখতে!
বয়স নেহায়েত কম নয় এমন এক ব্যক্তি এই উদ্যোগ নিয়েছেন। তার বয়স সত্তরের কাছাকাছি। গোঁফ-দাড়িও পেকেছে তার। শরীরের চামড়ায় বয়সের ছাপটা পরিস্কার ফুটে উঠেছে। মাথার চুলও পুরোপুরি নেই অর্থাৎ যাকে টাক বলা যায়। কিন্তু তাতে কী? তার ইচ্ছাশক্তি এখন প্রবল। প্রিয় দলের খেলা দেখতে, গ্যালারিতে বসে সমর্থন জোগাতে সবাই যখন বিমানে করে উড়ে যাচ্ছেন রাশিয়ায়, তখন তিনি গেলেন ট্রাক্টরে করে!
ঘটনাটি আশ্চর্য মনে হলেও সত্য। হাবার্ট ওয়ার্থ নামে এক জার্মান সমর্থক এমন কাণ্ডই ঘটিয়েছেন। টানা দশ দিন ভ্রমণ করে নিজে গ্রাম হতে চলে যান বিশ্বকাপের দেশ রাশিয়াতে। দারুণভাবে নিজের ট্রাক্টরটি সাজিয়েছেন হাবার্ট। সঙ্গে নিয়ে গেছেন একটি পোষা কুকুরকে। ট্রাক্টরে করে নিজের পর্যাপ্ত খাবারও নিয়ে যান হাবার্ট। সঙ্গে একটি সাইকেলও রয়েছে। জার্মানির পতাকা উড়িয়ে ধীরে ধীরে তিনি কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছেছেন।
হাবার্টকে রাশিয়ার মস্কোতে পা রাখতে প্রায় এক হাজার মাইল পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। অতিক্রম করতে হয়েছে দুই দেশ- পোল্যান্ড ও বেলারুশ সীমান্ত। গত বৃহস্পতিবার যখন তিনি বেলারুশ সীমান্তে পৌঁছান তখন বেলারুশের নিরাপত্তকর্মীরা তার পথ আটকে দেয়। অবশ্য প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসা শেষে আবার ছেড়েও দিয়েছে তারা। বেশ পুরনো মডেলের একটি ট্রাক্টর করে কীভাবে এতোটা পথ অতিক্রম করলেন সেটি সত্যিই বিস্ময়কর ব্যাপার।
অনেকেই এই বিস্ময়কর ভ্রমণ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে এ ব্যাপারে হাবার্টের অভিমত হলো, ইচ্ছা থাকলে অনেক কিছুই করা সম্ভব হয়। তিনি ঘণ্টায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছেন বলে জানান। অনেকটা পথ গাড়ি চালানোর পর তার যখন খিদে লাগতো, তখন রাস্তার পাশে ট্রাক্টর রেখেই রান্নাবান্না শুরু করে দিতেন। এরপর আবার ড্রাইভিং সিটে বসতেন হার্বাট। দারুণ এই ভ্রমণটা বড্ড উপভোগ্য করেছেন বলেও জানিয়েছেন হাবার্ট। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো ট্রাক্টরের ভেতরের অন্যরকম এক পরিবেশ। এক প্রকার বেডরুমের মতোই দেখতে ট্রাক্টরটি। খাওয়ার জন্য ছোট্ট একটি টেবিল রয়েছে, আছে বিছানাও!
হাবার্ট পোষা কুকুরটির জন্যও আলাদা কক্ষ করেছেন। হাবার্ট ট্রাক্টরটি চালানোর সময় তার পাশেই কুকুরটি থাকতো। তবে রাতে সেটিকে তার নিজস্ব কক্ষেই রাখা হতো। হার্বাটের এই ভ্রমণ কাহিনী ইতিমধ্যেই অনেক মহারথীকেই তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো তাকে নিয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ করেছে।