দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নানা সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে, শীতের মৌসুমে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ছাড়াও হার্টের অন্য সমস্যায় আক্রান্ত হন অনেকেই। আবার হার্ট ফেল হয়ে যায় অনেকের। এমন সমস্যা তাহলে কী করবেন?
সাম্প্রতিক সময় দেখা যাচ্ছে, অনেক কমবয়সীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে এই হৃদরোগ। যাদের বয়স চল্লিশের ঘরে, তাদের তো আছেই, এমনকি ৩০ -এর ঘরেও হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেক মানুষ। হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ গুরুত্ব না দেওয়া কিংবা জীবনযাপনে অনিয়ম যেমন- কারণ হতে পারে, তেমনি আবহাওয়ার বদলও এই হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ হতে পারে।
অবশ্য খুব নির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ নেই, তা-ও অনেকেই মনে করেন যে, হঠাৎ তাপমাত্রার হেরফের হলে, সেটি প্রভাব ফেলে হৃদযন্ত্রের উপরেও। বহু সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, শীতের মৌসুমে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ছাড়াও হার্টের অন্যান্য সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন অনেকেই। আবার হার্ট ফেল হয়ে যায় অনেকের। শীতে আমাদের শরীরে স্নায়ুব্যবস্থার ‘সিমপ্যাথেটিক অ্যাক্টিভেশন’ অনেকটা বেড়ে যায়। তাই রক্তনালী সঙ্কুচিত হওয়ার প্রবণতাও বাড়ে। একে বলা হয়, ‘ভ্যাসোকনস্ট্রিকশন’। এমনটি হলে শরীরে রক্তচাপ আরও বেড়ে যায়। তাই সারা শরীরে রক্ত সরবারহ করতে আমাদের হৃদযন্ত্র দ্বিগুণ জোরে কাজ করা শুরু করে দেয়। বাইরের তাপমাত্রা অনেকটা কমে এলে, শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে তখন অসুবিধা হয়। তাতে হাইপোথার্মিয়া হতে পারে যাকে হৃদযন্ত্রের রক্তনালীর ক্ষতিও হয়। যাদের এমনিতেই কোনও হৃদরোগ রয়েছে, তাদের শরীর এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতেও হিমশিম খায়।
তার উপর শীতে শরীরের অক্সিজেনের প্রয়োজনও বেড়়ে যায়। ভ্যাসোকনস্ট্রিকশনের জন্য এমনিতেই রক্তনালী সরু হয়ে যেতে পারে। তাই হৃদযন্ত্রে কম পরিমাণে অক্সিজেন পৌঁছায়। এতেও হৃদরোগের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
সাধারণত শীতকাল পড়লে সকলেই একটু বেশিই ঘরকুনো হয়ে যান। হাঁটাচলা কিংবা তখন শরীরচর্চার প্রতি ইচ্ছা কমে যায়। তার উপর খাদ্যাভ্যাসেও বদল চলে আসে। শীতের মৌসুম মানেই হলো এক দিন পিকনিক, এরপরের দিন বিয়েবাড়ি যাওয়ার বিষয়টি লেগেই থাকে। তাই খাওয়া-দাওয়ায় বেশ অনিয়মও হয়। যে কারণে শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। বেড়ে যায় হৃদরোগের ঝুঁকি।
হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে কী করবেন?
# কোনও রকম কো-মর্বিডিটি থাকলে, এই মৌসুমে শরীরের উপর বিশেষ নজর দিতে হবে।
# বিশেষ নজর দিতে হবে খাওয়া-দাওয়ার প্রতি। শীতকাল মানেই খাওয়া-দাওয়ায় মেতে থাকার কোনও কারণ নেই।
# কখনও শারীরিক পরিশ্রম কমাবেন না। শীতকালে ব্যায়াম করতে আলস্য চলে আসে, তবুও এই সময় শরীরচর্চায় আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। যোগাসনেও উপকার পেতে পারেন।
# শরীরে কোনও রকম অস্বস্থি হলেই দেরি না করে তাৎক্ষণাত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।