দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রবল আঘাতে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়সহ ভিয়েতনামের বিভিন্ন অঞ্চলে অন্ততপক্ষে ১৭৯ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এছাড়াও প্রবল বর্ষণে রেড রিভার নদীর পানি রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যায় ডুবে যায় হ্যানয়ের অধিকাংশ এলাকা।
গত ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে দক্ষিণ চীন সাগরের একটি নিম্নচাপ হতে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় ইয়াগি ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে আছড়ে পড়ে। ভিয়েতনামে আসার পূর্বে ফিলিপাইনের লুজন প্রদেশ ও চীনের কোটু দ্বীপেও তাণ্ডব চালায় ইয়াগি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আবহাওয়া সংস্থার কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই ২০২৪ সালের শুরু থেকে এই পর্যন্ত এশিয়ায় যতো ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে, সেসবের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল এই ইয়াগি।
ওইদিন উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে আঘাত হানার পর রাজধানী হ্যানয়ের দিকে এগোতে থাকে ইয়াগি। যেসব এলাকার ওপর দিয়ে ঝড়টি যাঃয়, সেসব এলাকায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিলো ২৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত- এই তথ্য জানিয়েছেন ভিয়েতনামের আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা।
এরপর সোমবার থেকে শক্তি হারানো শুরু করে এই ঘূর্ণিঝড়টি। তবে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ব্যাপক বর্ষণের জেরে হ্যানয়ের পাশদিয়ে বয়ে যাওয়া রেড রিভারসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকার পানি রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির আবহাওয়া দপ্তরের পরিচালক মাই ভ্যান কিয়েম গতকাল (বুধবার) এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, রেড রিভার নদীর পানি গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এছাড়াও অন্যান্য নদীতেও পানি বেড়েছে বিপুল পরিমাণে।
নদীতে পানির প্রবাহ রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে বন্যা ও ভূমিধস শুরু হয়েছে রাজধানী হ্যানয় ও বিভিন্ন প্রদেশে। দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা ইতিমধ্যেই হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। নিয়মিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল এবং সরকারি ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ। বন্যার কারণে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org