দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি ওজন দ্রুত গতিতে কমাতে চান তাহলে রান্নাঘরে যান। সেখানে উপস্থিত কিছু মশলার সাহায্য নিতে হবে। তাহলেই দ্রুত ঝরে যাবে মেদ।
ওজন বেশি থাকা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। বিশেষত: ভুঁড়ির বহর বাড়লেই মুশকিল! কারণ হলো, পেটের চর্বি বাড়লে শরীরে একাধিক হরমোনের ভারসাম্যও বিগড়ে যায়। বিপাকের হারেও আসে বদল। এই কারণে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হাই প্রেশার থেকে শুরু করে একাধিক জটিল রোগের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ে। তাই যেভাবেই হোক আপনাকে ওজন কমাতে হবে। সেই কাজে সাফল্য পেতে চাইলে সবার প্রথমেই ফাস্ট ফুড খাওয়া ছাড়তে হবে। এর পরিবর্তে বাড়ির তৈরি হালকা খাবার খান। সেইসঙ্গে প্রতিদিন সেবন করুন রান্নাঘরে উপস্থিত কিছু অত্যন্ত উপকারী মশলা। এতেই ঝটপট কমে যাবে ওজন। আর তখন এড়িয়ে চলা যাবে একাধিক রোগের ফাঁদ।
দারুচিনি
দারুচিনি হলো অত্যন্ত উপকারী একটি মশলা। এতে করে উপস্থিত একাধিক উপাদানের গুণে হজমশক্তিও বাড়ে। শুধু তা-ই নয়, বিপাকের হার বাড়ানোর কাজে এই মশলার জুড়ি নেই। যে কারণে খুব সহজেই ওজন কমে যাবে। এমনকি নিয়ন্ত্রণে থাকে ডায়াবেটিসের মতো জটিল অসুখসমূহ। এই ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চামচ দারুচিনি পাউডার মিশিয়ে নিন। এরপর এই পানীয়তে দিন চুমুক। এতেই সমস্যাকে বশে রাখতে পারবেন।
মেথি
এই মশলাটিতে রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। মূলত ফাইবার পেট ভরিয়ে রাখে। যে কারণে খিদে পায় কম। কম খেলে যে ওজন ঝটপট কমে যাবে- এ কথা তো বলাই বাহুল্য। শুধু তা-ই নয়, নিয়মিত মেথি খেলে মেটাবোলিজম কিংবা বিপাক হারও এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যাবে। সেই সুবাদে ওজন কমে। এই ক্ষেত্রে এক চামচ মেথি এক গ্লাস পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে দিন। পরের দিন সকালে উঠেই সেই পানিতে চুমুক দিন। এতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
কালো মরিচ
কালো মরিচ হলো অত্যন্ত উপকারী একটি মশলা। এতে রয়েছে একাধিক জরুরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য প্ল্যান্ট কম্পাউন্ড। এইসব উপাদান শরীর এবং স্বাস্থ্যের হাল ফেরানোর কাজে একাই একশো। শুধু তা-ই নয়, নিয়মিত মরিচ খেলে বিপাক হার আরও বাড়ে। যে কারণে শরীর মেদ পুড়িয়ে ফেলে। তাই আজ থেকে মরিচ খাওয়া শুরু করুন। এই ক্ষেত্রে স্যালাডের মধ্যে অল্প করে এই মশলার গুঁড়া ছড়িয়েও খেতে পারেন।
হলুদ
ঝটপট ওজন কমাতে চাইলে হলুদ খেতেই পারেন। কারণ হলো, এতে রয়েছে কারকিউমিন নামক একটি ম্যাজিক উপাদান যা মেটাবোলিজম রেট বাড়িয়ে ওজন কমাতেও সাহায্য করে। শুধু তা-ই নয়, নিয়মিত হলুদ খেলে কমে যায় প্রদাহ। যে কারণে একাধিক জটিল ক্রনিক অসুখ কাছে ঘেঁষার সুযোগও পায় না। তাই আজ থেকে প্রতিদিন একটা ছোট সাইজের রসুন চিবিয়ে খেয়ে নিন। চিবিয়ে খেতে না চাইলে পানি দিয়ে গিলে নিন। তাতেও উপকার মিলবে। ঝটপট কমে যাবে মেদ।
রসুন
এই ভেষজটিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদানের ভাণ্ডার। এইসব উপাদান শরীর এবং স্বাস্থ্যের হাল ফেরানোর কাজে একাই একশো। শুধু তা-ই নয়, দ্রুত গতিতে ওজন কমানোর কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই ভেষজ। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই রসুন রাখুন। তাহলে যেমন মেদ গলবে, সেইসঙ্গে শরীরও সুস্থ্য থাকবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org