দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খুব স্বাভাবিক একটি বিষয় হলো মিষ্টি খেলেই জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তেই পারে। তার প্রভাবে হবু মায়েদের গর্ভস্থ ভ্রূণটির ক্ষতিও হতে পারে। তাই মিষ্টি, চকোলেট, আইসক্রিম কিংবা মিষ্টি পানীয় খাওয়ার বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে। এই সময়ে কয়েকটি বিষয় মেনে চললে এই প্রবণতা রুখে দেওয়া যাবে।
হবু মায়েরা অর্থাৎ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কী খাবেন ও কী খাবেন না, তা নিয়ে নানা রকম বিধিনিষেধ থাকেই। এই অবস্থায় নারীদের বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার খেতেও ইচ্ছে করে। কারও কারও চিজ় স্লাইস খেতে ইচ্ছে করে, আবার কেও এই সময় তেঁতুল দেখলে নিজেকে আর সামলাতে পারেন না। কারও কারও আবার মিষ্টির প্রতি আসক্তি জন্মায় এই সময়।
এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলেছেন, আসলে এই সময় হবু মায়েরা শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে নানা পরিবর্তনের মধ্যেদিয়ে যান। তাই হঠাৎ এমন সব খাবার খাওয়ার ইচ্ছে হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তবে যখন তখন মিষ্টি খেলে তো রক্তে শর্করাও বাড়তে থাকে। এর প্রভাবে গর্ভস্থ ভ্রূণটির ক্ষতিও হতে পারে। তাই মিষ্টি, চকোলেট, আইসক্রিম বা মিষ্টি পানীয় খাওয়ার বিষয়েও সতর্ক থাকাটা দরকার। এই সময় কয়েকটি বিষয় মেনে চললে এই প্রবণতাটি রুখে দেওয়া যাবে অনায়াসে।
# প্রোটিন, ভিটামিন ও বিভিন্ন খনিজের গুণে সমৃদ্ধ দানাশস্য, ফল, সব্জির মধ্যে প্রাকৃতিক শর্করা বেশি থাকে। নিয়মিত এই খাবারগুলো খেলে রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না মোটেও।
# এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, যখন আপনার ভীষণ মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করবে, সেই সময় পানি খেতে পারেন। পানি অনিচ্ছাকৃত এই মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছেকে বশে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
# পরিমিত পরিমাণে খাবার খেতে হবে। তবে বারে বারে খেতে পারেন। এই হলো ভালো থাকার মন্ত্র। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এই নিয়ম মেনে চললেই রক্তে শর্করা আরও বেড়ে যাওয়ার ভয়ও থাকবে না।
# তবে একেবারেই মিষ্টি না খেলে এই সময়ে মনখারাপ হতে পারে। ডায়াবেটিস না থাকলে বা ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে মিষ্টি খাবার খেতে হবে, তবে অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে। তবে এর পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে ভুলবেন না। প্রয়োজনে বাড়িতে কিছুটা খেজুর কুচি করে রেখে দিন। মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করলে এই সময় একটু খেজুর কুচি মুখে দিতে পারেন।
# এই সময় সকাল থেকে রাত অবধি ৩ বার ভাল মতো খাবার খান। অর্থাৎ ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনার করুন নিয়ম করে। সঙ্গে ৩ বার অল্প অল্প করে মুখরোচক অথচ স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার রুখে দিতে এই নিয়মগুলো মেনে চলুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org