দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশিষ্ট সাংবাদিক, দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার সাবেক সম্পাদক এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মাহবুবুল আলম (৭৮) গতকাল সকাল ৯.২৫ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্নাল্লিল্লাহি…..ওয়া…রাজিউন)। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
মাহবুবুল আলমের মৃত্যুতে সর্বমহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার তাঁকে বারডেম হাসপাতালের নিয়ে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
মাহবুবুল আলম গত ১৮ বছর দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গতবছর ১৯ অক্টোবর অবসরে যান। এরপরে তিনি বেক্সিমকো গ্রুপের উপদেষ্টা নিযুক্ত হন। পেশাগত জীবনে মাহবুবুল আলম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান সম্পাদকও ছিলেন। তিনি ২০০৭ সালে ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্য উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মাহবুবুল আলম স্ত্রী এবং তিন মেয়ে রেখে গেছেন। তারা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। আজ তাদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে গতকাল দুপুুরে মাহবুবুল আলমের লাশ প্রথমে গুলশানে তার ছোট ভাইয়ের বাসায় নেয়া হয়। বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে তাঁর প্রথম নামাজে নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। তাঁর দ্বিতীয় নামাজে জানানা অনুষ্ঠিত হয় তাঁর দীর্ঘদিনের কর্মস্থল ইনডিপেনডেন্ট কার্যালয়ে। আজ বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে তার তৃতীয় নামাজে নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। বিদেশে অবস্থানরত স্ত্রী এবং ৩ মেয়ে দেশে ফেরার পর আজিমপুর গোরস্তানে তার বাবার কবরেই তাঁকে দাফন করা হবে। আগামী সোমবার গুলশান-২-এ (সড়ক-৪৮, বাড়ি ১০/বি) ছোট ভাইয়ের বাসায় মাহবুবুল আলমের কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে।
মাহবুবুল আলমের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিশিষ্ট্য ব্যক্তিবর্গ গভীর শোক প্রকাশ এবং মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন। প্রবীণ সাংবাদিক মাহবুবুল আলমের মৃত্যুতে দি ঢাকা টাইমস্ এর পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত জীবনি:
প্রবীণ সাংবাদিক মাহবুবুল আলম ১৯৩৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পদ্মা নদীঘেঁষা বাংলাবাজার ইউনিয়নের বানিয়াল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৫৩ সালে সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটস প্রেস অব পাকিস্তানে (এপিপি) কাজের মধ্য দিয়ে তাঁর সাংবাদিকতার শুরু হয়। এরপর কর্মজীবনে তিনি নিউ নেশন, সাপ্তাহিক ডায়ালগের সম্পাদক ছিলেন। স্বাধীনতার পর প্রথমদিকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেসসচিব হিসেবেও কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। এরপর লন্ডন হাইকমিশন এবং ওয়াশিংটন দূতাবাসের বার্তা বিভাগে দীর্ঘদিন কাজ করেন তিনি। এইচ. এম. এরশাদের শাসনামলে মাহবুবুল আলম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহির্বিশ্ব বিভাগের মহাপরিচালক ছিলেন। এরপর তিনি রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভুটানের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। কর্মজীবনে অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদকসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হন এই প্রথীতযশা সাংবাদিক মাহবুবুল আলম।