দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি এমন হতো যে শরীরের কোথাও কেটে গিয়েছে কিছুক্ষণ পর তা নিজে নিজেই সেরে গেল তবে কেমন হবে? মানুষ ম্যান থেকে সুপারম্যানে পরিণত হবে। আর এই সুপারম্যান বানানোর প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একদল বিজ্ঞানী। তারা এমন এক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের চেষ্টা করছে যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক ক্ষত সেরে যাবে নিজে নিজেই।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর এই প্রজেক্টের নাম হলো ইলেকট্রনিক প্রেসক্রিপশন বা ইলেক্ট আরএক্স। এই প্রজেক্টের আওতায় তারা এমন একটি যন্ত্র তৈরির ব্যবস্থা করছে যা বৈদ্যুতিক প্রবাহের মাধ্যমে মানুষের শরীরের উপর নজর রাখবে। মার্কিন প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা বা ডারপা বলছে, এই উদ্ভাবনের ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক বিপ্লব হয়ে যাবে। কেননা এতে করে মানুষের ওষুধের উপর নির্ভরতা কমে যাবে। মৌলিক কোন ধরনের শারীরিক আঘাত কিংবা ক্ষত পর্যবেক্ষণ ও রোগ সারানোর প্রক্রিয়ায় আমূল পরিবর্তন আনবে এই প্রজেক্টের মাধ্যমে উদ্ভাবিত যন্ত্র। ডারপা একে বলছে রোগ সারানোর পেসমেকার। নতুন এই যন্ত্রটি স্থাপন করা হবে মানুষের শরীরের ভেতরে। এর আকার এতই ক্ষুদ্র হবে যে, এটি মানুষের শরীরের রক্তের কণিকার রক্তপ্রবাহের সাথে সারা শরীরে প্রবাহিত হবে। কিন্তু মজার বিষয়টি হলো এটি মূলত মস্তিস্কের সাথে স্নায়ুবিক যোগাযোগ স্থাপন করবে এবং সেখানে প্রয়োজনীয় উদ্দীপনা যোগাবে। স্নায়ুবিক উদ্দীপনার এই যন্ত্রটির মূল ভিত্তি হলো নিউরোমডুলেশন। নিউরোমডুলেশন হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কয়েকটি স্নায়ু মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডের মাধ্যমে শরীরের অপর সব স্নায়ুকে যুক্ত করে। এটি সমন্বিতভাবে শরীরের ভেতরে থাকা সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গের দিকে লক্ষ্য রাখে এবং রোগজীবাণু সংক্রমণ প্রতিহত করে। গবেষকরা বলছেন এই শারীরিক নিউরোমডুলেশন প্রক্রিয়া আহত ব্যক্তিকে সুস্থতা অনুভব করানোর পরিবর্তে তার মস্তিস্কে ব্যথা, প্রদাহ এবং দুর্বলতা প্রদান করে।
ইলেক্ট আরএক্স বলছে তারা এই স্বাভাবিক নিউরোমডুলেশনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে শারীরিক অসুস্থতাকে সুস্থ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এতে করে যন্ত্রের সঞ্চিত বিদ্যুৎশক্তিকে ব্যবহার করে মস্তিষ্ককে উদ্দীপনা দেওয়া হবে শারীরিক ক্ষতকে দ্রুত সারানোর জন্য, ফলে আপনার শরীরের কেটে যাওয়া অংশ কিছুক্ষণ পর আপনা আপনিই সেরে যাবে।