দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ পশ্চিমাদের সাহায্যে আফগান মেয়ে আয়েশা মহাম্মদ জাই(১৯)এর নাকে সফল অস্ত্রপ্রচার সম্পূর্ণ হয়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকরা আয়েশা কাটা নাকের জায়গায় কৃত্রিম নাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সাম্প্রতিক সিএনএন সহ অনেক সংবাদমাধ্যমে প্রথমবারের মতো সেই ছবি প্রকাশিত হয়েছে। টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে প্রথম আফগান কিশোরী আয়েশা নাক কাটা ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। তালেবানপন্থী স্বামীর হাতে ওই পরিণতি দেখে সারা বিশ্বেই সমবেদনা তৈরি হয়েছিল তাঁর প্রতি। নাকহীন মুখ দেখানোটা আয়শার জন্য ছিল খুবই কষ্টের।
আয়েশার বিয়ে হয়, যখন তাঁর বয়স ১৬৷ উরুজগান প্রদেশে তালেবান এবং স্থানীয়দের মধ্যে শান্তি চুক্তির একটি অংশ হিসেবে আয়েশা এবং তাঁর বোনকে তুলে দেওয়া হয় একটি পক্ষের হাতে৷ আয়েশার হবু স্বামী ছিল সেই পক্ষে৷ সে তখন আয়েশা এবং তাঁর বোনকে নিয়ে যায়৷ আয়েশা এবং তাঁর বোনকে ক্রীতদাসীর মত খাটায় শ্বশুড়বাড়ির লোকেরা৷ তালেবান পরিবারটি অবর্ণনীয় নির্যাতন চালায় তাঁর ওপর। আয়েশা পালিয়ে যায়৷ কান্দাহারে আয়েশা ধরা পড়ে যায় তাঁর স্বামীর হাতে৷ শাস্তি হিসেবে স্বামী তাঁর নাক ও কান কেটে দুর্গম পাহাড়ে ফেলে যায়। গত বছর আফগানিস্তানের দক্ষিণে অবস্থিত উরুজগান প্রদেশে এই ঘটনা ঘটে৷ আয়শা বলেন, ‘তারা যখন আমার নাক-কান কাটছিল, আমি তখন অজ্ঞান হয়ে যাই। মাঝরাতে জ্ঞান ফেরার পর নাকের ওপর ঠাণ্ডা পানির মতো লাগছিল আমার। রক্তের কারণে আমি চোখ খুলতে পারছিলাম না।’
আয়েশা নিজেই টাইম ম্যাগাজিনে ছবি তোলার জন্য রাজি হন৷ আয়েশার ভাষ্য অনুযায়ী, ‘‘আমি চাই, সারা বিশ্ব দেখুক আফগানিস্তানে কী হচ্ছে৷ তালেবান ক্ষমতায় গেলে মেয়েদের কী দুর্দশা হবে, তা সবাই জানুক৷”
টাইম ম্যাগাজিন আরো লিখেছে যে, এ ঘটনা দশ বছর আগে ঘটেনি, ঘটেছে সম্প্রতি৷ এই মুহূর্তে মার্কিন সেনারা যদি আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যায়, তাহলে এসব অসহায় মেয়েদের কীভাবে রক্ষা করা হবে ?
যুদ্ধবিরোধী অনেকেই বলছে, অসহায় আয়েশাকে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ এর মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানে মার্কিন হামলাকে অনুমোদন করা হচ্ছে৷ আরো দীর্ঘদিন আফগানিস্তানে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ বলা প্রয়োজন, ২০০১ সালে আফগানিস্তান আক্রমণের পর প্রায় ৪৩ শতাংশ অ্যামেরিকান এখন মনে করছে, আফগানিস্তানে যাওয়াটা ঠিক হয়নি৷ আফগানিস্তানে সেনা পাঠানো ছিল একটি ভুল সিদ্ধান্ত৷
সূত্রঃ সিএনএন