দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শরীর হচ্ছে একটি রহস্যময় যন্ত্র। যন্ত্রকে সচল রাখতে যেমন জ্বালানী ব্যবহার করতে হয় ঠিক তেমনি আমাদের শরীরের জন্যও প্রয়োজন পর্যাপ্ত জ্বালানী। তবে সাধারণ যন্ত্র এবং মানব যন্ত্রের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য রয়েছে। সাধারণ যন্ত্রে যেকোন সময় জ্বালানী প্রবেশ করালে কোন ক্ষতি হয় না তবে মানব যন্ত্রে যেকোন সময় জ্বলানী প্রবেশ করালে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
আজ আমরা আলোচনা করব মানব যন্ত্র বা শরীরের জন্য সুষম খাবার নাকি সঠিক সময় কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের শরীরের দৈনন্দিন কার্যাবলি সম্পাদন করতে নিয়মিত সুষম খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শরীরের সঠিক গঠন এবং নতুন কোষ তৈরি করতে সুষম খাবারের বিকল্প নেই। তবে সেই খাবার ইচ্ছে মত দিনের যেকোন সময় গ্রহণ করলেই কি শরীর ঠিক থাকবে? কখনই না। কারণ শরীর সময় মেইন্টেইন করে তার কার্যাবলি সম্পাদন করে। সাধারণত আমাদের শরীর পুষ্টি গ্রহণ করার জন্য দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যয় করে এবং অন্য সময় বিভিন্ন কোষের ক্ষয় পূরণ এবং নতুন কোষ গঠনে কাজ করে।
তাই যখনই আপনি খাবার সময় না খেয়ে অন্য সময় খাবার গ্রহণ করেন, তখন আপনার শরীর ক্ষয় পূরণ এবং নতুন কোষ গঠনে অংশ গ্রহণ করা বাদ রেখে পুষ্টি গ্রহণ করতে শুরু করে। কারণ শরীর পুষ্টি গ্রহণ করাকে বেশি প্রাধান্য দেয়। ফলে শরীরের স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্থ হয়।
আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসে সাল্ক ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড: সচিন পাণ্ডা একইধরনের দু্ই দল ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালান। প্রথম দলটিকে বেশি চর্বিওয়ালা এবং বেশি চিনিযুক্ত খাবার খেতে দেন এবং তারা যেন দিনের যেকোন সময় ইচ্ছে মত খাবার গ্রহণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হয়। অন্য দলটিকে একইধরনের এবং একই মাপের ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতে দেওয়া হয় কিন্তু তাদের খাবার জন্য ৮ ঘন্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
১৮ সপ্তাহ পর দেখা যায় প্রথম দলের ইঁদুরগুলোর ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া তাদের শরীরে কোলেস্টরলের মাত্রা বেড়েছে এবং অন্ত্রে রোগ দেখা দিয়েছে। অপরদিকে যে ইঁদুরগুলো বেঁধে দেওয়া সময়ে একই খাবার খেয়েছে তারা কোন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়নি। তার কারণ হচ্ছে তাদের নিয়মিত খাবার গ্রহণ শরীরের স্বাভাবিক কাজকে বজায় রেখেছে। ফলে তারা রোগ্মুক্ত এবং সুস্থ রয়েছে।
শরীর ঠিক রাখতে সুষম খাবার যেমন গুরুত্বপূর্ণ তার থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করা। তাই আজ থেকেই নিজেকে সুস্থ রাখতে লাইফস্টাইলে পরিবর্তন নিয়ে আসুন। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ করুন এবং নিজেকে সুস্থ রাখুন।