দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় কি করছেন, কেন করতে পারছেন না, কিভাবে করলে ভাল হয় এমন নানা সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন? আর এমন নানা সমস্যার কারণে বসের কাছে নানা কথা শুনতে হচ্ছে? এমন ব্যক্তি পৃথিবীতে অনেক রয়েছে। তবে এই সমস্যা থেকে কেবল তারাই উত্তোরণ পেয়েছে, যারা নিজেই নিজের উপদেশদাতা হয়েছেন।
একজন উপদেশদাতা আপনার কাজকর্ম দেখে সেটা বিচার-বিশ্লেষণ করেন। তারপর সেই কাজের কোন সমস্যা থাকলে তা সমাধান করার উপায় এবং কিভাবে তা আরো ভাল করা যায় তা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে মনে রাখবেন আপনাকে উপদেশ দেওয়ার মত আপনার চেয়ে বড় উপদেশদাতা আর কেউ নেই। আজ আমরা জানবো কিভাবে নিজেই নিজের উপদেশদাতা হওয়া যায়।
১। আপনার কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টিকারি কারণ খুঁজে বের করুনঃ
কর্মক্ষেত্রে কোন কাজ করতে করতে আমাদের নিজেদের কিছু আচরণ কাজের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। তাই এই ব্যাঘাত সৃষ্টিকারি কারণগুলো কোন উপদেশদাতা আপনাকে ধরিয়ে দিবে না। তাই নিজের সমস্যা নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে। বিশেষ করে কাজ করার সময় অনেকের বার বার এসএমএস, কল আসতে থাকে যা আপনার মনযোগকে নষ্ট করে দেয়। বিশেষ করে অনেকেই একটি কাজের পাশাপাশি অন্যদের সাথে চ্যাট করতে থাকেন। অনেকেই আবার একটি কাজ করতে করতে পাশের সহকর্মীর সাথে অপ্রয়োজনীয় কথায় মেতে থাকি। এই সমস্যাগুলো আপনার কাজের গতি অনেক কমিয়ে দেয়। তাই আপনি নিজে থেকেই এই অভ্যাসগুলো ত্যাগ করুন। সহকর্মীর সাথে একটু হাসি তামাশা করা বা অন্যদের সাথে চ্যাট করার দরকার হলে নির্দিষ্ট কাজ শেষ করে তারপর করুন। এতে আপনার কাজ দ্রুত সম্পাদন করতে পারবেন।
২। অফিসের নিয়মাবলী আপনার অনুকূলে নাকি প্রতিকূলেঃ
আপনি যে অফিসে চাকরি করছেন সেই অফিসের নিয়মাবলি আপনার অনুকূলে নাকি প্রতিকূলে তা আপনাকেই বুঝতে হবে। যদি কোন নিয়মাবলি আপনার প্রতিকূলে থাকে তা খুঁজে বের করতে হবে এবং ধীরে ধীরে আপনাকে সেই নিয়মাবলিগুলো সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে। কারোর অফিস হয়ত শুরু হয় সকাল ৮ টা থেকে। অথচ সে হয়ত ঘুম থেকে উঠে ৭ঃ৩০ মিনিটে। বাকী ৩০ মিনিটে রেডি হয়ে অফিসে আসতে তার অনেক কষ্ট হয়ে যায়। আপনি হয়ত ভাবছেন অফিস ৯ টায় শুরু হলে ভাল হত। এক্ষেত্রে আপনাকে ভাবতে হবে যে, আপনার জন্য অফিসের নিয়ম পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই এই নিয়মটি আপনার প্রতিকূলে গেলেও নিজের ব্যক্তিগত কাজের সময় ( যেমন ঘুমানোর সময় পরিবর্তন করা) পরিবর্তন করে অফিসের সময় মেনে চলতে হবে।
৩। কর্মক্ষেত্রে আপনার দুর্বলতাঃ
কর্মক্ষেত্রে আপনার কোন বিষয়ে বেশি সমস্যা দেখা দিচ্ছে বা আপনি কোন সাইডে বেশি দুর্বলতা অনুভব করছেন তা নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে। এখন আপনাকে সেই সমস্যা সমাধান করতে হলে কি পদক্ষেপ নিতে হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। কারণ কোন মানুষই সব কাজে পারদর্শী না। নানা সমস্যা থাকতেই পারে। তবে নিজের দূর্বলতা নিজের থেকে অন্য কেউ ভাল বোঝে না। তাই সমস্যা খুঁজে সমাধানের চেষ্টা করুন অথবা প্রয়োজনে অন্য কারোর সাহায্য নিতে পারেন।
৪। একটি নির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে কাজ শুরু করুনঃ
সকালে অফিসে এসে আপনি প্রথমেই আজ সারাদিন কি করবেন তার জন্য একটি তালিকা তৈরি করুন। এবং কোন কাজ করতে আপনার কেমন সময় লাগবে তা নির্ধারন করে রাখুন। এটি আপনার কাজের গতি বৃদ্ধি করে দিবে। সেই সাথে আপনার সময়ের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে কোন কাজ করতে আপনার কেমন সময় লাগছে তা নির্ধারণ করতে এবং সে অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
৫। আপনার দায়িত্বের সঠিক ব্যবহারঃ
অন্যরা আপনাকে যতই পরামর্শ দিক না কেন আপনি যদি কর্মক্ষেত্রে নিজের দায়িত্বের সঠিক ব্যবহার না করতে পারেন না বা দায়িত্ব সম্পর্কে উদাসীন থাকেন তবে শিগ্রই চাকরি হারাতে পারেন। তাই নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন। আপনাকে এখন কি করতে হবে এবং ভবিষ্যতে আপনাকে অফিসের কোন কোন কাজের দায়িত্ব নিতে হতে পারে সেই বিষয়ে নিজেকেই অনুসন্ধান করতে হবে।
কোন ব্যক্তি যদি নিজে থেকেই কোন সমস্যার সমাধান করতে পারে তবেই সে দ্রুত সফল হতে পারবে। আর নিজে নিজে সমস্যা সমাধান করতে হলে আপনাকেই নিজের উপদেশদাতা হতে হবে।