দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত বছরে আলোচিত বিষয় ছিলো সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড। খাশোগিকে হত্যার পর তার দেহাবশেষ দুটি কালো ব্যাগে রাখা হয়েছিল বলে তুরস্কের একটি সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে। এই দাবির স্বপক্ষে তারা নতুন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে যে, তুরস্কের গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে ওই সংবাদপত্রটির। ইতিপূর্বেও এই সংবাদপত্র সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যা-সংক্রান্ত একাধিক বোমা ফাটিয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, সৌদি ‘হিট টিম’-এর কিছু লোক সৌদি কনসাল জেনারেলের বাড়ির সামনের একটি ভ্যান থেকে নামলেন। সেখান থেকে বেশ কয়েকশো মিটার দূরেই সৌদি কনসুলেট। দু’হাতে দুটো কালো ব্যাগ নিয়ে কনসাল জেনারেলের বাড়িতে ঢুকলেন একজন। তুরস্কের সংবাদমাধ্যমে দাবি হলো, ওই ব্যাগ দুটিতে খাশোগিরই দেহাবশেষ ছিল।
তুরস্কের ওই দৈনিকের সাংবাদিক ফেরহাত উনলু একটি বই লিখেছেন। তার বইয়ের নাম হলো- ‘ডিপ্লোমেটিক অ্যাট্রোসিটি : দ্য ডার্ক সিক্রেটস অব খাশোগি মার্ডার’।
উনলু জানিয়েছেন যে, কনসাল জেনারেলের বাড়িতে একটি কুয়া রয়েছে। পুরো বাড়িটি তল্লাশি করা হলেও ওই কুয়াটি ভালো করে পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়নি তদন্তকারী দলকে। যে কালো প্যাকেট নিয়ে কনসাল জেনারেলের বাড়িতে ঢুকেছিল হিট-টিম, তা নিয়ে বেরিয়ে আসার কোনো রকম প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তাহলে কী কুয়ার মধ্যেই বাক্সবন্দি খণ্ড-বিখণ্ড খাশোগির লাশ ফেলা হয়েছে?
অপরদিকে প্রথম সারির একটি মার্কিন দৈনিক এর স্বপক্ষে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। বলা হয়েছে, ‘এবার সরাসরি প্রমাণ মিললো। কনসুলেট হতে একটি ভ্যান কনসাল জেনারেলের বাড়ি যায়। হিট-টিমের একটি লোক ভ্যান হতে কালো রঙের ব্যাগ নামান।
এতেই বোঝাই যাচ্ছে যে, খাশোগির দেহাবশেষ কনসাল জেনারেলের বাড়িতে আনা হয়। এতোদিন এই প্রশ্নটিই সবার মনে ঘুরপাক খাচ্ছিলো যে, আসলে খাশোগির দেহ কোথায় গেলো? তদন্তে এবার এই দিকটাই জোর দেওয়া উচিত যে, কনসাল জেনারেলের বাড়িতে সেদিন আসলে কী ঘটেছিল।’
উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর বিবাহ বিচ্ছেদের কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটে গিয়েছিলেন নির্বাসিত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। তারপর দীর্ঘদিন ধরে তার কোনো খোঁজ মেলেনি। পরে শোনা যায়, সৌদি আরব হতে পাঠানো একটি বিশেষ দল কনসুলেটেই খুন করেছিল জামাল খাশোগিকে। শ্বাসরোধ করে মেরে দেহটাকে টুকরো টুকরো করে কেটে রাসায়নিকে মিশিয়ে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হয় এই সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে। এমন নির্মম পরিণতির কথা শুনে বিশ্বের বিবেকবান মানুষ ফুসে ওঠে। সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের বিরুদ্ধে সমগ্র বিশ্ব ফুসে উঠেছে। যা এখনও মানুষের বিবেককে চরমভাবে ধাক্কা দেয়।