দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০১৫ সালে ৬ বিশ্ব শক্তির সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হয়েছিল, বর্তমানে তার চেয়েও বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইরান।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এই তথ্য দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, চুক্তিতে পৌঁছানোর পূর্বের সময়ের চেয়ে আমরা এখন আরও বেশি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছি…. ইরানের ওপর চাপ বেড়েছে, আমরা তারপরও এই সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখবো।
পারমাণবিক কর্মসূচির লাগাম টানার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে জার্মানি, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ওই চুক্তি স্বাক্ষর করে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলের এই চুক্তিতে ত্রুটি রয়েছে বলে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
পরে ২০১৮ সালে পারমাণবিক চুক্তি হতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। একই সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরান ধারাবাহিকভাবে এই চুক্তির বিভিন্ন শর্ত শিথিলও করছে।
উল্লেখ্য যে, গত ৩ জানুয়ারি ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিদেশী সশস্ত্র শাখার কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে সব ধরনের সীমা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে ইরান।
ইরানের এই ঘোষণার পর পারমাণবিক অস্ত্র ও পারমাণবিক চুল্লি তৈরিতে তেহরান ইউরেনিয়ামের ব্যবহার করতে পারে বলেও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ২০১৮ সালে পারমাণবিক চুক্তি হতে বেরিয়ে যাওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার জবাবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইরান।
তেহরান চুক্তির শর্ত সীমিত করায় বর্তমানে ইরান, রাশিয়া, চীন, জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য ভিয়েনায় রাজনৈতিক স্তরের এক বৈঠকে বসার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করে। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টাও হবে। ১৫ দিনের মধ্যে এই বিরোধের নিষ্পত্তি না হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ইরানের।
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তিন দেশের পাঠানো চিঠির জবাব
অবশ্যই দেবে ইরান। তবে এই চুক্তিটির ভবিষ্যৎ এখনও মরে যায়নি; এটি ইইউর ওপর নির্ভর করছে বলেও মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ।