দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ খৃস্টাব্দ, ১ ফাল্গুন ১৪২৬ বঙ্গাব্দ, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪১ হিজরি। দি ঢাকা টাইমস্ -এর পক্ষ থেকে সকলকে শুভ সকাল। আজ যাদের জন্মদিন তাদের সকলকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা- শুভ জন্মদিন।
যে মসজিদের দৃশ্যটি আপনারা দেখছেন সেটি পিরোজপুর জেলার ঐতিহাসিক মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ। বিশ্বের দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলোর মধ্যে শতবর্ষের প্রাচীন মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদের অবস্থান ২৩তম।
পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার উত্তরে বুড়িরচর গ্রামের আকন বাড়িতে কাঠের কারুকার্যমণ্ডিত মমিন মসজিদ হলো এই মঠবাড়িয়া মসজিদ। এটি একটি অন্যতম স্থাপত্য নিদর্শন। বিশ্বের দৃষ্টিনন্দন মসজিদগুলোর মধ্যে শতবর্ষের প্রাচীন মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদের অবস্থান হলো ২৩তম এবং এটি দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র কাঠের তৈরি মুসলিম স্থাপত্যশিল্প হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।
১৯১৩ সালে মৌলভী মমিন উদ্দিন আকন তৎকালীন বরিশাল জেলার স্বরূপকাঠি হতে নিয়ে আসা ২১ জন কারিগরের সাহায্যে নিজ বাড়িতে এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। দুষ্প্রাপ্য লোহাকাঠ এবং বার্মা সেগুন কাঠের ওপর প্রাকৃতিক রঙ ব্যবহার করে মমিন মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদের কাঠের দেওয়ালে অপূর্ব নান্দ্যনিকতায় ইসলামিক সংস্কৃতি, ক্যালিগ্রাফি, বিভিন্ন ফুল, পাতা এবং ফলের আকর্ষণীয় সব নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রায় ৭ বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের পর ১৯২০ সালে ইন্দো-পারসিক ও ইউরোপীয় স্থাপত্যের মিশ্রণে তৈরি মমিন মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছিলো।
টিন শেড চৌচালা বিশিষ্ট এই মমিন মসজিদের দৈর্ঘ্য ২৪ ফুট এবং প্রস্থ ১৮ ফুট। মসজিদের চারপাশের বেড়া ৩টি অংশে বিভক্ত হয়েছে। মসজিদের উত্তর-দক্ষিণে ২টি ও পূর্ব-পশ্চিমে ৪টি করে সর্বমোট ১২টি জানালা রয়েছে। মসজিদের কারুকার্যখচিত প্রবেশদ্বার এবং মেহরাবে বিদ্যমান ক্যালিগ্রাফি সবচেয়ে অধিক আকর্ষণীয়। প্রবেশদ্বারের উপরের বাম দিকে আরবি অক্ষরে ইসলামের চার খলিফার নাম এবং মাঝখানে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর নাম অলংকৃত করা হয়েছে সেখানে। এই মসজিদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর নির্মাণের সময় কোনো লোহা বা তারকাটা ব্যবহার করা হয়নি। মমিন আকনের নাতি মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ মমিন মসজিদের প্রত্নতাত্ত্বিক গুরত্ব ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে “মমিন মসজিদ: স্মৃতি বিস্মৃতির খাতা” নামক একটি বইও রচনা করেন। যে কারণে ২০০৩ সালে মসজিদটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে মসজিদের সংস্কার কাজে লোহা ব্যবহার করে মসজিদের মূল ডিজাইনে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। আকর্ষণীয় জ্যামিতিক নকশা এবং আরবি ক্যালিগ্রাফির জন্য দূরদূরান্ত হতে অনেক দর্শনার্থী এই মসজিদটি দেখতে আসেন। উদয়তারা বুড়িরচর গ্রামের মূল সড়কটিও এই মমিন মসজিদের নামেই নামকরণ করা হয়েছে।
তথ্য: https://vromonguide.com এর সৌজন্যে।