দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নাসা বলেছে যে, জানুয়ারির চেয়ে ফেব্রুয়ারিতে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের মাত্রা চীনে অনেক কমেছে। সব মিলিয়ে এটা প্রায় নিশ্চিত যে চীনে করোনা ভাইরাসের কারণে দূষণ কমেছে!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, চীনে দূষণের মাত্রা নাটকীয়ভাবে অনেক কমে এসেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে অর্থনীতির গতি কমে আসার বিষয়টি আংশিকভাবে সত্য হলেও এতে প্রভাব বিস্তার করেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। নাসার মানচিত্রে দেখানো হয় যে, চলতি বছর নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা অনেক কমেছে।
বিবিসি’র এক খবরে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কর্তৃপক্ষ চীনের কারখানাগুলোর কার্যক্রম ব্যাপকহারে বন্ধ রাখার পর এই খবর এলো। প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর চীনে এই পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লেও বেশিরভাগ সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে চীনে, যেখানে গত বছরের শেষের দিকে (ডিসেম্বরে) প্রাদুর্ভাবটির উৎপত্তি হয়।
নাসার বিজ্ঞানীরা বলেছেন, অস্বাস্থ্যকর নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড গ্যাস মূলত মোটর যানবাহন ও শিল্প কারখানা হতে নির্গত হয়। গ্যাসটির মাত্রা কমে আসার এই প্রবণতা প্রথম দেখা গিয়েছে প্রাদুর্ভাব শুরুর স্থান হুবেই প্রদেশের উহান শহরে। তবে এর পরে পুরো দেশটিতে একই চিত্র উঠে আসে।
উহান শহরে দূষণের মাত্রা কিভাবে কমে এসেছে তা আগের বছর একই সময়ের সঙ্গে তুলনা করে চিত্র প্রকাশ করেছে- নাসা
২০১৯ সালের প্রথম দুই মাসের চিত্রের সঙ্গে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসের চিত্র তুলনা করলো নাসা। মহাকাশ সংস্থাটি লক্ষ্য করেছে যে, বায়ু দূষণের মাত্রা কমে আসার এই চিত্র চীনে পরিবহন চলাচল এবং ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টির সঙ্গে একেবারে মিলে যাচ্ছে। এছাড়াও ওই সময়ে লাখ লাখ মানুষ কোয়ারেন্টিনে গিয়েছিলেন।
নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের বাতাসের মান নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করে আসছেন ফেই লিউ। তিনি বলেছেন, ‘প্রথমবারের মতো আমি দেখছি যে, কোনো একটি বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এতো বিশাল এলাকা জুড়ে দূষণ এমনি নাটকীয়ভাবে কমে এলো।’
তিনি আরও জানান, ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময়ও তিনি নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড কমে যাওয়ার চিত্র দেখেছিলেন তবে সেটি আরও অনেক ধীর গতিতে হয়।
নাসা জানিয়েছে, অতীতেও চীনের চন্দ্রবর্ষ উদযাপনের সময় অর্থাৎ জানুয়ারির শেষ ও ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে দূষণের মাত্রা কমে আসার নজীর আছে। তবে উদযাপন শেষ হওয়ার পরই এই মাত্রা আবারও বাড়তে থাকে।
লিউ আরও বলেছেন, ‘গত বছরের তুলনায় চলতি বছর কমে যাওয়ার এই মাত্রা বেশ চোখে পড়ার মতোই এবং এটি দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ীও ছিল। আমি অবাক হইনি কারণ অনেক শহর ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য নানা ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’