দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্লাস্টিকের বর্জ্য সহজেই পচে-গলে মাটিতে মিশে যায় না। ঠিক সে কারণেই প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশের জন্য এতোবড় হুমকি। তবে প্লাস্টিক বর্জ্য প্রকৃতিতে মিশে যাবার কাজটা পানির মতো সহজ হয়ে যাবে এমন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন এক বিজ্ঞানী!
অপর এক বিষয়ে গবেষণার কাজ করতে গিয়ে দৈবক্রমে সামান্থা জেংকিনস নামে এই গবেষক আবিষ্কার করেছেন এমন একটি ফাংগাস বা ছত্রাক, যা প্রকৃতপক্ষে প্লাস্টিক-খেকো।
পৃথিবীর দেশে দেশে পরিবেশ দূষণের এক অন্যতম কারণই হলো প্লাস্টিক। যে কোনো বড় শহরের আবর্জনার স্তূপের দিকে তাকালে সবখানেই দেখতে পাওয়া যাবে হাজার হাজার, লাখ লাখ প্লাস্টিক। এখন সারা পৃথিবীতে মহাসাগরের গভীর তলদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে, ঢুকে পড়েছে তিমির মতো নানা প্রাণীর পেটেও, মানুষের খাবারে, এমনকি মানব ভ্রুণের প্ল্যাসেন্টাতেও ঢুকে পড়েছে এইসব প্লাস্টিকের কণা।
অন্যসব আবর্জনার মতো প্লাস্টিক পচে-গলে মাটিতে মিশে না, এটি টিকে থাকে শত শত বছর। কিছু প্লাস্টিক রিসাইকল করা সম্ভব, তবে অন্য কিছু প্লাস্টিক রিসাইকেল করাও খুব কঠিন। এক ধরনের প্লাস্টিক রয়েছে যাকে বলে পিইটি (পলিইথাইলিন টেরেপথালেট), যা ব্যবহার করা হয় নানা ধরনের পানীয়ের বোতল তৈরির কাজে। এগুলো সহজেই নষ্ট হয়না।
সামান্থা জেংকিনস ঠিক করলেন যে, এই পিইটি’কে ফাংগাস দিয়ে ধ্বংস করা যায় কিনা সেটিই তিনি পরীক্ষা করে দেখবেন। তার আবিষ্কৃত ফাংগাসটি পিইটি ও পলিইউরিথেনের ওপর পরীক্ষা করে দেখেছেন তিনি।
গবেষক সামান্থা জেংকিনস
পরীক্ষায় তিনি দেখলেন যে, ‘প্লাস্টিক দিচ্ছেন, আর ফাংগাসটা সেই প্লাস্টিক খেয়ে ফেলছে! এরপর ফাংগাস জন্ম দিচ্ছে আরও একটি ফাংগাসের। সেটা থেকে নানা রকম বায়ো-মেটিরিয়াল বা জৈবপদার্থও তৈরি হচ্ছে। সেটি নানা কাজে লাগানো হচ্ছে। যেমন- খাবার তৈরি করার জন্য, পশুর জন ফিডস্টক তৈরি করতে, এমনকি এন্টিবায়োটিক তৈরির কাজেও।’
সামান্থা জেংকিন্স হলেন বায়োহম নামে একটি বায়ো-ম্যানুফ্যাকচারিং ফার্মের প্রধান বায়োটেক প্রকৌশলী।
তার কোম্পানীর একটি গবেষণা প্রকল্পের কাজের জন্য তিনি কয়েকরকম ফাংগাস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। এরমধ্যে একটি ফাংগাস এমন একটা কাণ্ড করে বসলো যে তার গবেষণার গতিপথ যেনো ঘুরে গেলো অন্যদিকে।
‘একটা জার ভর্তি রয়েছে শস্যকণা- তার ওপরেই এক দলা ফাংগাস গজিয়েছে। এরমধ্যে উত্তেজনাকর বা আকর্ষণীয় কিছুই ছিল না। তবে যেই জারটা খোলা হলো, দেখা গেলো যে দারুণ এক ব্যাপার ঘটে গেছে।’
সামান্থা জেংকিন্স দেখলেন যে, জারটা বায়ুরোধী করার জন্য যে প্লাস্টিকের স্পঞ্জ দেওয়া ছিল ফাংগাসগুলো সেটাতে ক্ষয় ধরিয়ে ফেলেছে এবং অন্য যে কোনা খাবারের মতোই সেটাকে হজম করে ফেলছে।
জেংকিন্সের প্রকল্পের লক্ষ্যই ছিল জৈব-ভিত্তিক পদার্থকে ইনসুলেশন প্যানেল তৈরিতে কীভাবে ব্যবহার করা সম্ভব সেটি পরীক্ষা করা। তবে এই প্লাস্টিক-খেকো ‘ক্ষুধার্ত ফাংগাস’ তাদের গবেষণাকে নিয়ে গেছে অন্য আরেক দিকে।
বায়োহম বর্তমানে কাজ করছে কিভাবে এই ফাংগাসের আরও শক্তিশালী একটা জাত তৈরি করা যাবে। যা হয়তো একসময় প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে পরিবেশকে মুক্ত করতে সাহায্য করবে। তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।