দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বহুল আলোচিত কিশোরী ফেলানী হত্যা মামলায় গতকাল সোমবার বিএসএফ-এর রুদ্ধদ্বার আদালতে সাক্ষ্য দিলেন তার পিতা নুরুল ইসলাম নুরু। তার বক্তব্য আদালতে রেকর্ড করা হয়েছে।
কোচবিহারের সোনারিতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর (বিএসএফ) ১৮১ ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্ট (জিএসএফসি)-এ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এই সাক্ষ্য নেয়া হয়। আজ মঙ্গলবার সাক্ষ্য নেয়া হবে ফেলানীর মামা আবদুল হামিদের।
সোমবার বেলা ১০টা নাগাদ কড়া পাহারায় বাংলাদেশের ৪ জনকে সার্কিট হাউস থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে সোনারিতে বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, বিচার চলছে। তবে বিচার সংক্রান্ত তথ্য জানানোর কোন রেওয়াজ নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গত রোববারই বিএসএফ-এর আমন্ত্রণে ফেলানীর পিতা ও মামা এবং কুড়িগ্রাম বিজিবি ৪৫ ব্যাটালিয়নের লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল হক খালেদ এবং কুড়িগ্রামের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্রাহাম লিংকন কোচবিহার শহরে আসেন। তাদের সকলকে কোচবিহার শহরের সার্কিট হাউসে কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে। সাংবাদিকদের যেমন সার্কিট হাউসের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেয়া হয়নি তেমনি বিএসএফ ক্যাম্পে যেখানে বিচার চলছে তার আশেপাশেও কাওকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
ফেলানী হত্যায় বিএসএফ-এর ১৮১ ব্যাটালিয়নের জওয়ান অমিয় ঘোষকে দোষী সাব্যস্ত করে গত ১৩ আগস্ট থেকে কোর্ট মার্শাল শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্তের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। বিএসএফ জওয়ান অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারা (অনিচ্ছাকৃত খুন) এবং বিএসএফ আইনের ১৪৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি ১৫ বছরের ফেলানীকে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফ জওয়ান অমিয় ঘোষ তার ইনসাস রাইফেল থেকে গুলি করে হত্যা করে। কাঁটাতারের ওপর দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা ঝুলে ছিল ফেলানীর মৃতদেহ। সেই ছবি প্রচারিত হওয়ার পর সারা পৃথিবীতে হইচই পড়ে যায়। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ওই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানায়। বিজিবি’র পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার বিচার দাবি করা হয়। এরপরই বিএসএফ ফেলানী হত্যার ঘটনায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত শেষে একটি মামলা করে। গঠন করে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্ট।
জানা গেছে, আগামী ২২ আগস্ট পর্যন্ত শুনানি চলবে। এরপর যে কোন দিন কোর্ট মার্শালের রায় ঘোষণা করা হবে।
উল্লেখ্য, এই প্রথম ভারতে বিএসএফ-এর হাতে এক বাংলাদেশীর মৃত্যুর ঘটনায় সাক্ষ্য নেয়া হচ্ছে বিদেশীদের।