দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হঠাৎ করেই কোথাও ঘুরতে গেলেন। ঘুরতে গিয়ে প্রয়োজন পড়লে তখন মনে পড়ে, কতোকিছুই নেওয়া হলো না। সেজন্য ঘুরতে যাওয়ার আগে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস হাতের কাছে গুছিয়ে রাখলে বিদেশ বিভুঁইয়ে গিয়ে বিপদে পড়তে হয় না।
ইতিমধ্যেই তাপমাত্রা পারদ পড়তে শুরু করেছে। শীত আসছে দেখলেই মনটা কেমন যেনো উড়ু উড়ু হয়ে যায়। এতো দিন শীতের ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে নানা জায়গায় ঘুরতে গেলেও এবার স্ত্রীর সঙ্গে একা ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। প্রথম কোনও কাজে পদক্ষেপ করতে গেলে সকলেরই যে আগে থেকেই অভিজ্ঞতা থাকবে তেমনটি কিন্তু না-ও হতে পারে। তাই বলে প্রথম ঘুরতে যাওয়ার রোমাঞ্চ অধরা থাকবে, তা কীভাবে হবে?
দেশে হোক কিংবা বিদেশেই হোক, সীমিত বাজেটের মধ্যেও সব দিক বিচার করে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা হয়। তবে কেবলমাত্র পর্যটক হিসেবেই নয়, যদি দুজনে মিলে ‘আরব বেদুইন’ হয়ে যেতে চান, তাহলে মাথায় রাখুন ছোট ছোট কয়েকটি টিপস- যা আপনার ভ্রমণে কাজে আসবে।
ভালো ব্যাগ নিন
বাইরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য অন্য কিছুতে বিশেষ খরচ না করে বরংচ ব্যাগের জন্য একটু বেশি খরচ করতেই পারেন। কারণ হলো, ঘুরতে গিয়ে যদি কখনও ব্যাগের বেল্ট ছিঁড়ে যায়, তা হলে আপনার ঘোরা মাটি হবে তাতে সন্দেহ নেই। তা ছাড়াও ভালো মানের ব্যাগ একবার কিনলে বহু দিন পর্যন্ত সেটি আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।
বীমা
আসলে প্রথম বারের মতো ঘুরতে যাওয়া নিয়ে সকলের মধ্যেই একটা উত্তেজনা থাকে- সেটিই স্বাভাবিক। তাই ঘুরতে যাওয়ার সময়, ছোট ছোট কিছু জিনিস একেবারেই মাথায় থাকে না। যেমন- ভ্রমণ সংক্রান্ত বীমা। ঘুরতে যাওয়ার নানা ব্যয়ের মধ্যে অনেকেই আবার এই অতিরিক্ত খরচটি করতে পছন্দ করেন না। তবে পরবর্তীকালে এটিই আপনার অনেকটা খরচ বাঁচিয়েও দিতে পারে। বিশেষ করে বিদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে।
বাজেট পরিকল্পনা করে নিন
কোথায় যাবেন তা ঠিক করার সঙ্গে সঙ্গেই কেমন খরচ হতে পারে, তার একটা পরিকল্পনা করে নেওয়াটা জরুরি। অর্থাৎ এই বিষয়টি নিয়ে একটা চকআউট করে নিন। ঘুরতে যাওয়ার খরচ, ট্রেনের টিকিট, থাকা-খাওয়া-ঘোরার খরচই শুধু নয়। ঘুরতে যাওয়ার আগেও অনেক কেনাকাটা থাকতে পারে। সেগুলো ধরেই এই বাজেট পরিকল্পনা করে নিন।
আপনি কোন সময় ঘুরতে যাবেন
গ্রীষ্মাবকাশ, শীতের ছুটি এই সময়গুলিতেই পর্যটকরা বেশি ঘুরতে গিয়ে থাকেন। তাই চাহিদা বুঝে হোটেল, ঘুরতে যাওয়ার গাড়ি সব কিছুর দামই তখন বেড়ে যায়। তাই যদি আপনি ছুটি ম্যানেজ করতে পারেন, তাহলে এই সময়গুলো বাদ দিয়ে ঘুরতে যাওয়াই ভালো হবে। কিছুটা হলেও সাশ্রয় করা যাবে অর্থ।
ওষুধ নিতে একেবারেই ভুলবেন না
অনেককেই হয়তো প্রতিদিন নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ খেতে হয়, সে ক্ষেত্রে সঙ্গে ওষুধ অবশ্যই রাখতে হবে। তা ছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধও সঙ্গে রাখতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ নথি পত্র যত্নে রাখুন
আপনি যেখানেই বেড়াতে যান না কেনো, নিজেদের পরিচয়পত্র নিতে অবশ্যই ভুলবেন না। প্রয়োজনে সব নথিপত্রের একাধিক ‘ফটোকপি’ করিয়ে রাখবেন। যদি হাসপাতাল সংক্রান্ত কোনও স্বাস্থ্যবীমা থাকে, তাও আপনাকে সঙ্গে রাখতে হবে। অন্যান্য কাগজপত্রও রাখতে হবে সঙ্গে।
টাকা রাখবেন কোথায়
বর্তমান সময় এটিএম কার্ডের যুগ। যে কারণে নগদ টাকার প্রচলন প্রায় কমে এসেছে। তবে কার্ড থাকলেও বেশ কিছু টাকা হাতে রাখতে হয়। সবটা এক জায়গায় না রেখে, ব্যাগের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রাখতে হবে। কোথায় কতো টাকা রাখলেন, সেটি অবশ্যই মনে রাখতে হবে।
বিদেশী মুদ্রার ক্ষেত্রে
আপনি যদি বিদেশে যাওয়ার জন্য মনস্থির করেন, তাহলে আগে থেকে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে রাখতে হবে। যাতে ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ডে আন্তর্জাতিক লেনদেনের সমস্ত সুযোগ সুবিধা নেওয়া থাকে। দেশের বাইরে গিয়ে হাতে সেই দেশের মুদ্রা না থাকলেও যাতে টাকা-পয়সা নিয়ে কোনো রকম চিন্তায় না পড়তে হয়। যাওয়ার আগে ‘কারেন্সি এক্সচেঞ্জ’ থেকে যেখানে যাচ্ছেন সেখানকার মুদ্রাও সঙ্গে রাখুন।
কেমন হোটেলে থাকবেন
আপনি চেষ্টা করুন এমন কোনো হোটেলে থাকতে, যেখানে খাবারের ব্যবস্থা থাকে। তাহলে কিছুটা হলেও টাকা বাঁচানো সম্ভব হবে। যেখানে আপনি যাচ্ছেন, সেখানে যদি ক্যাম্পে থাকার কোনো ব্যবস্থা থাকে, সেখানে রাত্রিযাপন করার চেষ্টা করতে পারেন।
ইন্টারনেট পরিষেবা
আপনি যেখানে যাবেন কিংবা থাকবেন, সেখানকার ইন্টারনেট পরিষেবা কেমন তা আগে থেকেই জেনে নেবেন। যাওয়ার আগে সেই জায়গা সম্পর্কে একটু পড়াশোনা করে যাবেন- অর্থাৎ ইউটিউবে কিছু ভিডিও দেখে নিন। সেখানকার বিশেষ বিশেষ জিনিস, ইতিহাস জানতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথাও বলতে হবে আপনাকে।
মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা
ঘুরতে গিয়ে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়িয়ে যাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তবুও যদি তেমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি মানিয়ে নেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে আপনাকে। অর্থাৎ ঠাণ্ডা মাথায় সবকিছু সমাধান করে নেওয়ায় হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।