দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই যুগে ‘ইন্টারনেট’ শব্দটি শোনেননি এমন মানুষ মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সকল কাজ কর্মেই ইন্টারনেটের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তবে প্রতিনিয়ত ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও ইন্টারনেট কীভাবে আবিষ্কার হয়েছে সেই ইতিহাস আমাদের অজানা।
ইন্টারনেট আসলে কী?
মূলত ইন্টারনেট হলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা অগণিত কম্পিউটার এবং ডিভাইস সমূহের মধ্যে আন্তঃসংযুক্তকারী একটি নেটওয়ার্ক। অর্থাৎ পুরো পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত, পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত অনেকগুলো কম্পিউটার এবং ডিভাইস নেটওয়ার্কের সমষ্টিই হলো ইন্টারনেট। ইন্টারনেট সকল ধরনের জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত একটি নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা।
যেভাবে কাজ করে এই ইন্টারনেট
ইন্টারনেট হলো বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত আন্তঃসংযুক্ত ডিভাইসগুলোর মধ্যকার বিভিন্ন ধরনের ডাটা এবং মিডিয়া আদান-প্রদানের একটি মাধ্যম। প্যাকেট রাউটিং নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ইন্টারনেট কাজ করে থাকে, যা ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) ও ট্রান্সপোর্ট কন্ট্রোল প্রটোকল (টিসিপি) এর মাধ্যমে সংযুক্ত। টিসিপি ও আইপি একইসঙ্গে এটি নিশ্চিত করে যাতে করে বিশ্বের যে কোনো কেন্দ্র থেকে যে কোনো ডিভাইসে ইন্টারনেট নিরবিচ্ছিন্নভাবে ব্যবহার করা সম্ভব।
কীভাবে এলো ইন্টারনেট
ইন্টারনেট এমন একটি প্রযুক্তি যা আসলে কোনো একক ব্যক্তির কৃতিত্বে আবিষ্কার হয়নি। এটি আবার রাতারাতিও আবিষ্কার হয়নি, বরং দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী এবং গবেষকদের নিরলস পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে ইন্টারনেট বর্তমান এই অবস্থায় এসেছে।
মূলত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্যই ইন্টারনেটের মতো প্রযুক্তির উদ্ভব ঘটেছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময় ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্বে প্রথম স্যাটেলাইট আবিষ্কার করে; যার নাম দেওয়া হয়েছিল স্পুটনিক (Sputnik)। এটি আবিষ্কারের কারণে সোভিয়েত ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা সহজ হয়ে যায়, যা আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগ নিজেদের জন্য হুমকিও মনে করে। যে কারণে তারা এমন এক প্রযুক্তি তৈরির জন্য গবেষণা শুরু করে, যা দিয়ে তারা নিজেদের মধ্যে গোপনে তথ্য আদান-প্রদান করতে সক্ষম হবে ও সোভিয়েত আগ্রাসন মোকাবেলা করতে পারবে। এমন ভাবনা থেকেই তারা রকেট এবং কম্পিউটার প্রযুক্তি উন্নতির দিকে নজর দেন। এক সময় তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গোপনে তথ্য প্রেরণের চাহিদাও অনুভব করেন।
আমেরিকার ডিফেন্স অ্যাডভান্স রিসার্চ প্রজেক্ট এজেন্সি এক কম্পিউটার হতে অন্য আরেকটি কম্পিউটারে তথ্য প্রেরণ করতে সক্ষম হয়েছিলো; আর এই তথ্য প্রেরণের নেটওয়ার্কের নামকরণ করা হয়েছিলো আরপা নেটওয়ার্ক কিংবা আরপানেট (ARPANET) হিসেবে। ১৯৬৯ সালে এই আরপানেটের মাধ্যমে এক কম্পিউটার হতে অন্য কম্পিউটারে প্রথম একটি মেসেজ প্রেরণ করা হয়। ১৯৬৯ সালেও তিন মিলিটারি কন্টাকটর একত্রে রাউটিং ডিভাইসের প্রাথমিক কাঠামো ইন্টারফেস মেসেজ প্রসেসর কিংবা আইএমপি (IMP) তৈরি করেন, যার কারণে ডাটা ট্রান্সমিশন প্রক্রিয়ায় ব্যাপক বিপ্লব পরিলক্ষিত হয়েছিলো।
এরপর সত্তরের দশকে এসে ভিন্ট সার্ফ নামক জনৈক কিংবদন্তি ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রোটোকল (TCP) আবিষ্কার করেন; যা ইন্টারনেট প্রটোকল (IP) নামেই অধিক পরিচিত। এই আইপি কিংবা ইন্টারনেট প্রটোকলের মাধ্যমে একসঙ্গে অনেকগুলো কম্পিউটারকে আরপানেটের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়েছিলো। এরপর আশির দশকে এসে ডোমেইন আবিস্কারের কারণে ওয়েবসাইটের সংখ্যা তখন বাড়তে থাকে ও সার্ফের প্রটোকল ওয়ার্ল্ড ওয়াইড নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই তখন ইন্টারনেটে রূপান্তরিত হয়।
এই সময় বিশ্বের সকল কম্পিউটারকে একই নেটওয়ার্কে নিয়ে আসাও সম্ভব হয় ও বেশ দ্রুত বেগেই ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়তে শুরু করে দেয়। কারণ হলো শুধু আইপি কিংবা ইন্টারনেট প্রটোকল অ্যাড্রেস মাধ্যমে অন্য কম্পিউটারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা বেশ কঠিনই ছিল, কারণ হলো আইপি অ্যাড্রেস বেশ জটিল সংখ্যা দ্বারাই তৈরি হয়ে থাকে; তবে যখন ডোমেইন আবিষ্কার হয়, তখন তা মনে রাখা এবং সাইটে প্রবেশ করা অনেক সহজতর হয়ে ওঠে।
তারপর ১৯৯১ সালে ইন্টারনেট জগতে আবার ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এই সময় সুইজারল্যান্ডের এক কম্পিউটার প্রোগ্রামার টিম বার্নার্স লি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব আবিষ্কার করেছিলেন। এই কারণে টিম বার্নার্স লি কে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। ১৯৯৩ সালের কথা। তখন ন্যাশনাল সেন্টার ফর সুপারকামিং অ্যাপ্লিকেশনস (NCSA) তৈরি করে মোসাইক (Mosaic) ওয়েব ব্রাউজার। এই ব্রাউজারের মাধ্যমেই সর্বপ্রথম ছবি এবং লেখাকে একই পেজে দেখানো সম্ভব হয়েছিলো। তারপর হতেই ইন্টারনেট প্রযুক্তি বাণিজ্যিকভাবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিলো। এভাবেই আরপানেটের সঙ্গে ক্রমাগত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ের সংযুক্ততার মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রযুক্তি বর্তমান অবস্থানে চলে আসতে সক্ষম হয়। বর্তমানে এই ইন্টারনেট ছাড়া পুরো দুনিয়া অচল। এই ইন্টারনেটে আর্থিক লেন-দেনসহ দুনিয়ার তাবৎ কিছুই হয়ে থাকে। বিশ্বের সব মানুষই এখন এই ইন্টারনেট ব্যবহার করে এর সুফল পাচ্ছেন। সূত্র- একুশে টেলিভিশন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।