দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সিরিয়ার কাছে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির কাঁচামাল সোডিয়াম ফ্লুরাইড বিক্রি করেছে ব্রিটেন। রোববার দ্য মেইল পত্রিকায় এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে।
পত্রিকাটি জানায়, ২০০৪ সালের জুলাই থেকে ২০১০ সালের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে দুই দফায় দুটি ব্রিটিশ কোম্পানিকে ৫টি রপ্তানি লাইসেন্স দেয় যুক্তরাজ্য সরকার। কোম্পানি দুটিকে সিরিয়ার কাছে সোডিয়াম ফ্লুরাইড রপ্তানি করারও অনুমতি দেয়া হয়। আর এসব রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করেই রাসায়নিক অস্ত্র সারিন গ্যাস তৈরি করে সিরিয়া সরকার। এই গ্যাস ব্যবহার করে আসাদ বাহিনী গত মাসে ১৪শ’ মানুষকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিদেশী সংবাদ মাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে বাংলাদেশ নিউজ২৪ এ খবর দিয়েছে।
শনিবার রাতে প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ সরকার সিরিয়ার কাছে রাসায়নিক অস্ত্র সরবরাহের কথা স্বীকার করে। এমন এক সময়ে তারা এসব পদার্থ বিক্রি করে যখন প্রেসিডেন্ট আসাদের কাছে রাসায়নিক অস্ত্র বিরাট মজুদ রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল।
ব্রিটেনের কমন্স সভার অস্ত্র রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ কমিটির এমপি থমাস ডোচার্টে বলেন, ‘রপ্তানি লাইসেন্স দেয়ার সময় আমরা ভেবেছিলাম কোন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য সরবরাহ করা হবে না। এখন জানতে পারলাম সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে যেসব রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো ব্রিটিশ কোম্পানির দেয়া।’
খবরে আরও বলা হয়, গত সপ্তাহে ডিপার্টমেন্ট ফর বিজনেস, ইনোভেশন এন্ড স্কিলস সংক্ষেপে বি আইএস ২০১২ সালে এসব লাইসেন্স ইস্যু করে বলে খবর প্রকাশিত হয়। সিরিয়ায় কি পরিমাণ সোডিয়াম ফ্লোরাইড বিক্রি করা হয়েছে এবং কোন কোন কোম্পানি এগুলো বিক্রির সঙ্গে জড়িত আছে এ বিষয়ক কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হয়নি বিআইএস। তবে এ ঘটনা প্রকাশ হবার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন সোডিয়াম ফ্লোরাইড রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
ব্রিটিশ গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ রিচার্ড কেম্প বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির জন্যই সোসিয়াম ফ্লুরাইড আমদানি করেছিলেন। আর এ কাজ করতে তিনি কোন রকম মাসসিক পীড়ন অনুভব করেননি। ব্রিটিশ কূটনীতিক এবং আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভালভাবেই জানতেন। এ অবস্থায় ২০০৪ ও ২০১০ সালে এ দ্রব্যটি রপ্তানির অনুমোদন দিয়ে বিঅইএস অবশ্যই কান্ডজ্ঞানহীন কাজ করেছে’ বলে মন্তব্য করা হয়।
উল্লেখ্য, রাজধানী দামেস্কের কাছে করা রাসায়নিক হামলায় ১৪২৯ জন নিহত হয়। এদের মধ্যে ৪২৬ জন শিশুও রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চরম আপত্তির মুখেও প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ এনে সিরিয়ার বিরুদ্ধে যখন সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তখনই এই চাঞ্চল্যকর খবরটি প্রকাশ করে দ্য মেইল। এ অবস্থায় মার্কিনীদের সামরিক হামলার পথ আরও প্রশস্ত হলো বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।