দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বরফঢাকা আন্দেজে ৪ মাস জীবিত থেকে এক ব্যক্তি রেকর্ড করেছেন। তাকে দীর্ঘ ৪ মাস পর উদ্ধার করা হয়েছে।
বিবিসির ওই খবরে বলা হয়, এর আগের ঘটনার রেকর্ডটি ছিল ৭২ দিনের। কিন্তু এবার উরুগুয়ের এক ব্যক্তি আন্দেজ পর্বতমালার চূড়ায় তুষারের মধ্যে বেঁচে ছিলেন প্রায় ৪ মাস। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ওই চূড়ার উচ্চতা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মিটার। সেখানে দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে তাঁকে ইঁদুর পর্যন্ত খেতে হয়েছে। ৫৮ বছর বয়সী এ ব্যক্তির নাম রাউল ফার্নান্দো গোমেজ সারকুনেগুই। ৮ সেপ্টেম্বর আর্জেন্টিনার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ সান হুয়ানের এক সরকারি কর্মকর্তা তাঁকে উদ্ধার করেন।
জানা যায়, মোটরসাইকেলে গত মে মাসে চিলি থেকে আর্জেন্টিনার উদ্দেশে যাত্রা করেন গোমেজ। কিন্তু আন্দেজ পর্বতমালায় পৌঁছার পর তুষারঝড়ে তাঁর মোটরসাইকেলটি বিকল হয়ে পড়ে। সিদ্ধান্ত নেন, হেঁটেই পার হবেন। কিন্তু ঝড়ের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। শেষে চূড়ার একটি আশ্রয়কেন্দ্রে দিন পার করতে থাকেন তিনি। প্রথমে কিছুদিন ওই কেন্দ্রে থাকা কিছু খাবার দিয়েই চলতে থাকেন। কিন্তু একসময় ওই খাবারও শেষ হয়ে যায়। বাঁচার আশায় তিনি এরপর যা পেয়েছেন তাই খেয়েছেন। এর মধ্যে ছিল ইঁদুরও!
গত ৮ সেপ্টেম্বর তাঁর ভাগ্য খোলে। সেদিন তুষারের পরিমাণ মাপতে হেলিকপ্টারে চড়ে ওই আশ্রয়কেন্দ্রের পাশেই নামেন সান হুয়ানের এক সরকারি কর্মকর্তা। পরে ওই হেলিকপ্টারেই গোমেজ সান হুয়ানে ফেরেন। এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে খুব শিগগির তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
ফিরে আসার পর গোমেজের অনুভূতি জানার চেষ্টা করেন সান হুয়ানের গভর্নর হোসে লুইস। গোমেজকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন’ উত্তরে গোমেজ বলেন, ‘আগে করতাম না, এখন করি।’
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে একই পর্বতমালায় উরুগুয়ের রাগবি খেলোয়াড়দের বহনকারী একটি বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়। ওই ঘটনায় ৪৫ যাত্রীর মধ্যে বেঁচে গিয়েছিলেন ১৬ জন। তাঁরা সবাই হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রায় বেঁচে ছিলেন ৭২ দিন। সেটিই ছিল সর্বশেষ বরফের মধ্যে বেঁচে থাকার রেকর্ড। এবার নতুন রেকর্ড গড়লেন রাউল ফার্নান্দো গোমেজ। সূত্র : অনলাইন।