দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই মনে করেন, ঠাণ্ডা লাগা অবস্থায় দই খেলে আরও বাড়াবাড়ি হতে পারে। আসলেও কী তাই? আজ জেনে নিন সেই বিষয়টি।
শেষপাতে টক দই খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। সারা বছরই টক দই খেয়ে ভূরিভোজ শেষ করেন অনেকেই। আবার অনেকেই শৌখিন রান্নাতেও টক দই ব্যবহার করেন। দুধ খেলেই সমস্যা হয় বলে, বিকল্প হিসাবে দই একমাত্র ভরসা অনেকের জন্যই। তবে ঠাণ্ডা লেগে গলা খুসখুস, সর্দি-কাশি শুরু হলে বন্ধ হয়ে যায় টক দই খাওয়া।
অনেকেই মনে করেন, ঠাণ্ডা লাগা অবস্থায় দই খেলে আরও বাড়াবাড়ি হতে পারে। তবে পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, দই খেলে ঠাণ্ডা লাগবে এই ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত একটি ধারণা। কারণ হলো, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে টক দইয়ের কোনও বিকল্প হতে পারে না।
রোগের সঙ্গে লড়তে হলে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলাটা জরুরি। আর এই প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তুলতে যে খাবারগুলো সাহায্য করে, টক দই হলো তারমধ্যে অন্যতম। তাই সর্দি-কাশি থেকে দ্রুত সেরে উঠতে ভরসা রাখতে পারেন এই দইয়ের উপর। এই দই খেলে ক্ষতি তো হবেই না, বরং উল্টো তাড়াতাড়ি সেরে উঠতে পারবেন। বিশেষ করে শীতকালে বেশি করে টক দই খেতে বলে থাকেন চিকিৎসকরা। এখন প্রশ্ন হলো কিন্তু কেনো?
দইয়ে প্রোবায়োটিক উপাদান ছাড়াও থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম। তাই শীতকালে হাড় ভালো রাখতে দই খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্যালশিয়াম সবচেয়ে উপকারী একটি উপাদান। এ ছাড়াও গ্যাস-অম্বল, পেট ফাঁপা, গ্যাসের মতো সমস্যা দূর করতে টক দইয়ের ক্ষমতা অপরিসীম। তাছাড়াও, দইয়ে রয়েছে ভিটামিন বি ১২ ও ফসফরাস। শরীরের অন্দরে ঘটে চলা আরও অনেক সমস্যার নিমেষে সমাধান করে দিতে পারে এই টক দই। শীতকালে দই খাওয়ার সঙ্গে ঠাণ্ডা লাগার কোনো রকম সম্পর্ক নেই। বরং দই খেলে শরীর আরও সুস্থ থাকবে। পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, তবে শীতকালে মেপে টক দই খাওয়া যেতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি বিকেল ৫টার মধ্যে দই খাওয়া যায় তাহলে। ঠাণ্ডা লাগার ধাত থাকলে সেটি অবশ্য আলাদা কথা। সেই ক্ষেত্রে সন্ধ্যার পর দই এড়িয়ে যাওয়ায় ভালো। ঠাণ্ডা লাগবেই তার কিন্তু কোনও মানে নেই। তবে আগে থেকে সতর্ক থাকাটা জরুরি। বিশেষ করে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে সচেতন হতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org