দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই বাচ্চাদের হাড় শক্ত করতে নিয়মিত ভিটামিন ডি খাওয়ান। কিন্তু শিশুদের হাড়ের জোর বাড়িয়ে তোলা বা হাড় ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধ করতে ভিটামিন ডি-এর কোনও ভূমিকাই নেই বলে জানাচ্ছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা।
শিশুদের ছোট কাল থেকে হাড়ের জোর বাড়িয়ে তুলতে ক্যালশিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে বলেন পুষ্টিবিদরা। ক্যালশিয়াম শোষণ করতেও সাহায্য করে এই ভিটামিন ডি। এছাড়াও খেলতে গিয়ে কিংবা উঁচু কোনও স্থান থেকে পড়ে গিয়ে হাত-পা ভাঙার ভয় খানিকটা হলেও আটকে দিতে পারে এই ভিটামিন ডি। এমনই বিশ্বাস বেশির ভাগ অভিভাবকের। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা সেই বিশ্বাসে একেবারেই জল ঢেলে দিয়েছেন গবষেকরা। গবেষণা বলছে যে, বাচ্চাদের হাড় মজবুত করতে ভিটামিন ডি-এর কোনও রকম ভূমিকাই নেই। এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, দ্য ল্যানসেট ডায়াবেটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজি জার্নাল এ।
ভিটামিন ডি নিয়ে এমন অনেক ভ্রান্ত ধারণা দীর্ঘদিন প্রচলিত। তাই কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ভার্ড টি এইচ চান স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ যৌথভাবে একটি পরীক্ষামূলক গবেষণা শুরু করে। ৬ হতে ১৩ বছর বয়সি বেশ কিছু মঙ্গোলিয়ান বাচ্চাদের নিয়ে টানা ৩ বছর এই গবেষণা চালানো হয়।
পরীক্ষামূলক ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শিশুদের হাড়ের জোর বাড়িয়ে তোলা বা হাড় ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধ করতে ভিটামিন ডি-এর কোনও রকম ভূমিকাই নেই। ১৮ বছর বয়সে পৌঁছানোর পূর্বেই ৩ জনের মধ্যে অন্তত একটি শিশু এক বার না এক বার হাড় ভাঙার সমস্যায় পড়েছেন। শুধু তাই নয়, এই ভাঙা হাড় সেই সময় জুড়ে গেলেও সমস্যা বুড়ো বয়স পর্যন্ত পিছু ছাড়ে না।
এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ভিটামিন ডি- এর চাহিদা ইদানীং অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। গবেষণা প্রধান ও চিকিৎসক গানমা দাভাসম্ভু বলেন, “ক্যালশিয়াম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় খনিজ শোষণে ভিটামিন ডি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সেটি ঠিক। কিন্তু তা পূর্ণবয়স্ক মানুষদের জন্যই। শিশুদের জন্য এই নিয়ম মোটেও খাটে না। তবে যেসব বাচ্চাদের শরীরে রিকেট রোগের অস্তিত্বও পাওয়া গেছে, তাদের ক্ষেত্রে আবার এই ভিটামিনের গুরুত্বও অস্বীকার করা যায় না।” তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org