দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সব ভিটামিনই কিন্তু শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য কমবেশি জরুরি। তবে ভিটামিন ডি’তে রয়েছে এমন কিছু গুণাগুণ, যা হয়ে উঠতে পারে দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবনের এক চাবিকাঠি। হৃদযন্ত্রকে চাঙ্গা রাখতে কীভাবে সাহায্য করে এই ভিটামিন তা জেনে নিন।
দীর্ঘ আয়ু কোনও একটি বিষয়ের উপরেই যে নির্ভর করে, তা কিন্তু নয়। তবে এটাও ঠিক যে, কিছু কিছু উপাদান দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবন পেতে হলে অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে। ভিটামিন তারমধ্যে অন্যতম। ভিটামিন শরীরের নানা উপকারেও আসে। সব ভিটামিনই শরীর সুস্থ রাখার জন্য কমবেশি জরুরি। তবে ভিটামিন ডি-তে রয়েছে এমন কিছু গুণাগুণ, যা হয়ে উঠতে পারে দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে এই ভিটামিনটি। হাড় মজবুত রাখতেও সাহায্য করে এই ভিটামিন। তাছাড়াও রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদযন্ত্র ভালো রাখার ক্ষেত্রেও ভিটামিন ডি’র ভূমিকা রয়েছে। ব্যস্ত এবং অনিয়মিত জীবনযাত্রার কারণে এখন হৃদরোগীর সংখ্যা দিন দিনই বাড়ছে। চিকিৎসকরা মনে করেন, ভিটামিন ডি ট্যাবলেট খাওয়ার পাশাপাশি যদি নিয়ম করে শরীরচর্চা করা যায়, তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে। বেশ কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে যে, শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি হৃদযন্ত্রের উপরেও ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
নিয়মিত শরীরচর্চা করলেও হৃদপিণ্ড চাঙ্গা থাকে। নিয়ম করে শরীরচর্চার অভ্যাস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, ওজন বাগে রাখতেও এটি সাহায্য করে। সব মিলিয়ে কার্ডিয়োভ্যাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমে যায়। অপরদিকে, ভিটামিন ডি শরীরের রক্তচলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে, হৃদযন্ত্রে রক্তের প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে, যে কারণে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে। জিমে গিয়ে চার দেওয়ালের মধ্যে শরীরচর্চা না করে ভিটামিন পেতে হলে বাইরে বেরিয়ে রানিং, জগিং, কার্ডিয়ো ব্যায়ামও করা যেতে পারে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে ভিটামিন ডি এবং শরীরচর্চার পাশাপাশি ডায়েট এবং জীবনধারার উপরেও সকলকে নজর রাখতে হবে।
আমরা অনেকেই জানি সূর্যের আলো ভিটামিন ডি’র ভালো একটি উৎস। তাছাড়াও দুধ, তেলযুক্ত মাছ, মাশরুম, ডিমের কুসুমেও ভিটামিন ডি থাকে। চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ডি’র সাপ্লিমেন্টও নিতে পারেন। তবে শরীরে ভিটামিন ডি’র মাত্রা বেশি হয়ে গেলেও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। তাই ঠিক কী মাত্রায় ভিটামিন ডি আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজন, তা পুষ্টিবিদের কাছ থেকে যাচাই করে নিতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org