দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বজুড়ে মৌমাছির সংখ্যা কমতে থাকায় ফুলে ফুলে পরাগায়নও কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে দিন দিন। মৌমাছি যদি কখনো সত্যিই পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায়, তাহলে পরিণামে আমাদের এই পৃথিবীর পুরো ইকোসিস্টেমই ধসে পড়তে পারে। সত্যিকারের সজীব মৌমাছির অভাব পূরণ করতে হার্ভার্ড ও নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এবার তৈরি করেছেন রোবট মৌমাছি বা ‘রোবো বি’।
পরাগায়নে সক্ষম এমন মৌমাছি বানানোর জন্য প্রায় এক দশক কাজ করার পর বিজ্ঞানীরা এই সফলতার মুখ দেখতে পেলেন। ‘মাইক্রো এয়ার ভেহিকল প্রজেক্ট’ নামের অধীনে কর্মরত এই বিজ্ঞানীদের মাথায় প্রথম কৃত্রিম মৌমাছির গোষ্ঠী বানানোর পরিকল্পনা আসে ২০০৯ সালে। ‘মাইক্রো এয়ার ভেহিকল প্রজেক্ট’ এর উদ্দেশ্যই মূলত ক্ষুদ্রাকৃতির রোবটের দক্ষতা, ক্ষুদ্রাকৃতির তবে উন্নত ও জটিল ধরনের শক্তি সরবরাহ কেন্দ্রের উদ্ভাবন ইত্যাদি লক্ষ্যে কাজ করা। কেবল একক একটি মৌমাছি নয়, এই বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্য এমন বিশেষ মৌমাছি বানানো যা সজীব মৌমাছিদের সুশৃঙ্খল গোষ্ঠীবদ্ধ জীবনও অনুকরণ করতে পারবে। আপাতত তারা কেবলমাত্র পরাগায়নে সক্ষম একক মৌমাছি তৈরি করেছেন। তবে তারা যে পদ্ধতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন, তাতে অচিরেই কয়েক হাজার কৃত্রিম মৌমাছির একটি চাক বানিয়ে ফেলতে পারবেন বলে তারা আশাবাদী।
একক মৌমাছি না বানিয়ে গোষ্ঠীবদ্ধ মৌমাছি বানানোর ফলে অনেক বেশি দ্রুত এবং নিখুঁতভাবে কাজ সম্পাদন করতে পারবে। শুধু পরাগায়নই নয়, কোনো কিছু খোঁজা, উদ্ধার করা, পারমাণবিক দুর্ঘটনা কবলিত স্থানের মত বিপজ্জনক স্থানে অনুসন্ধানী কাজ চালানো ইত্যাদি ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে।
নতুন উদ্ভাবিত ৩ সেন্টিমিটার দৈর্ঘের এই যান্ত্রিক মৌমাছি প্রতি সেকেন্ডে ১২০ বার পাখা সঞ্চালন করতে পারে। এর আরেকটি বিশেষত্ব হলো, এখন পর্যন্ত উড়তে সক্ষম এমন যত যন্ত্র মানুষ বানিয়েছে তার মধ্যে এটিই ক্ষুদ্রতম। মস্তিষ্ক হিসেবে এই মৌমাছির দেহে দেয়া হয়েছে এমন এক ধরনের বিশেষ সেন্সর, যা এর চোখে এবং অ্যান্টেনার সঙ্গে সমন্বয় সাধন করতে পারবে।
তথ্যসূত্র: ইনহ্যাবিটেট