দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিয়ের পর ৬ বছর কেটে যাওয়ার পর সংসারে রয়েছে ৫ বছরের একটি ছেলে সন্তান। তবে বাদ সাধল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামে রিলস তৈরির এক নেশা। তার জেরেই মর্মান্তিক পরিণতি হলো এক যুবকের!
ওই যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এমন একটি লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যের বেগুসরাই জেলার ফাফাউত নামক গ্রামে।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ত্রীর ইনস্টাগ্রাম রিলস তৈরি করার বিষয়ে আপত্তি জানানোর কারণে বিহারের বেগুসরাইয়ে এক ব্যক্তিকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকরা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে যে, নিহত ওই যুবকের নাম মহেশ্বর কুমার রায়। ৬ বছর পূর্বে তিনি রানী কুমারীকে বিয়ে করেন ও তাদের ৫ বছরের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। ২৫ বছর বয়সী স্বামী মহেশ্বর কুমার কোলকাতায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সম্প্রতি তিনি তার বাড়িতে ফিরে যান। তবে বাড়িতে ফিরে তার স্ত্রীকে রিল তৈরিতে মগ্ন থাকতে দেখে আপত্তি করেন। এর জেরে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয় বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযুক্ত রানী কুমারীর ইনস্টাগ্রামে সাড়ে ৯ হাজারেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে এবং তিনি তার হ্যান্ডেলে এ পর্যন্ত ৫০০টিরও বেশি রিল পোস্ট করেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, সম্প্রতি শ্বশুরবাড়িতে যান মহেশ্বর। এরপর থেকেই তার আর কোনো খোঁজই পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তার ভাই রুদাল ফোন করেন। তবে মহেশ্বরের বদলে ফোন রিসিভ করেন অপর এক ব্যক্তি। তার সঙ্গে ওই ব্যক্তির কথা কাটাকাটি হয়। তারপর, নিজেদের বাড়িতে ফোন করে মহেশ্বরের খোঁজ নেই বলেও জানান রুদাল। সেই খবর পেয়েই, মহেশ্বরের পরিবারের লোকজন রাতে তার শ্বশুরবাড়িতে যান। তার বাবা জানিয়েছেন যে, সেখানে গিয়ে তারা মহেশ্বর রায়কে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। ওই সময় তার শ্বশুরবাড়ির কেও বাড়িতে ছিল না।
স্ত্রীকে রিলস তৈরিতে বাধা দেওয়ার কারণেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ছেলে মহেশ্বরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মহেশ্বরের বাবা।
মহেশ্বরের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এই বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ। নিহতের স্ত্রী রানী কুমারী কিংবা তার বাড়ির অন্য কারও এখনও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাদের খোঁজে রানীর আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org