দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান যুগ ইন্টারনেটের যুগ। যে কারণে রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, বিমানবন্দর কিংবা শপিং মলে ওয়াই-ফাই সিস্টেম করা থাকে। অনেকেই পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারও করেন। আবার অনেক জায়গায় পাসওয়ার্ড ছাড়াই সংযুক্ত হওয়া যায় ইন্টারনেটে। এই ওয়াইফাইগুলোকে পাবলিক ওয়াইফাই বলা হয়। তবে এগুলো ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
হয়তো সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রোল করে সময় কাটাচ্ছেন বা বন্ধুদের সঙ্গে গেম খেলছেন। অনেকেই আবার ফ্রি ওয়াই-ফাই পেয়ে মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করে ফেলেন সিনেমা কিংবা ওয়েব সিরিজ।
ইন্টারনেটে- জালিয়াতি, তথ্য চুরি, সাইবার ক্রাইম- এগুলো বর্তমানে আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তাকেও হুমকিতে ফেলে দিচ্ছে। তাই ইন্টারনেট এবং সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞরা পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করতে গেলে কিছু কাজ করতে নিষেধও করেন। কারণ হলো এইসব পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনতে পারেন। এই বিষয়ে কিছু তথ্য আজ জেনে নিন।
নিরাপত্তা
আসলে ফ্রি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কগুলো অনেক ক্ষেত্রে নিরাপদ নয়। এর মাধ্যমে হ্যাকাররা আপনার ফোনের ডেটাও অ্যাক্সেস করতে পারেন। ইন্টারনেট ব্যাংকিং কিংবা ট্যাক্স ফাইল করা- এসব কাজ ফ্রি ওয়াই- ফাই দিয়ে করা মানেই নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনা ছাড়া কিছু নয়। তাছাড়াও, কার্ডের তথ্য, টিন নম্বর কিংবা ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারের কাছে চলেও যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ সাইটের পাসওয়ার্ড
ব্যবহারকারীর নাম এবং পাসওয়ার্ড দিতে হয়, এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সাইটে না ঢোকাই ভালো পাবলিক ওয়াই–ফাই দিয়ে। এখানে হ্যাকারদের পাতা ফাঁদে এনক্রিপশনের পূর্বেই এইসব তথ্য লিক হতে পারে। ফ্রি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও অনেকটা থেকে যায়। আবার ম্যালওয়্যার প্রবেশ করতে পারে ডিভাইসেও। ভাইরাসের আক্রমণের আশঙ্কাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। শেষে হারাতে হবে শখের দামি মোবাইল ফোন কিংবা ল্যাপটপট। এভাবে আপনার মূল্যবান ডেটা চুরিও হয়ে যেতে পারে।
স্প্যাম এবং বিজ্ঞাপন
সাধারণভাবে ফ্রি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আপনার ডিভাইসে স্প্যাম এবং বিজ্ঞাপন আসার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। এতে করে আপনার ফোনের সব অ্যাপ ঠিকভাবে কাজও করবে না। বারবার হ্যাংও হতে পারে। এমনকি আপনার ফোন গরমও হয়ে যেতে পারে। তাতে করে এর প্রভাব পড়বে আপনার মোবাইলের ব্যাটারিতে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org