দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনিদ্রার সমস্যা রয়েছে অনেকের। অনিদ্রার মতো রোগের পিছনে যেসব সময় মানসিক চাপ কিংবা উদ্বেগের হাত রয়েছে, এমনটি কিন্তু মোটেও নয়। সাধারণ কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো ঘুমে ব্যাঘাতও ঘটাতে পারে। সেগুলো বিশেষ করে রাত ৮টার পর এড়িয়ে চলায় ভালো।
আমাদের সারাদিনে কায়িক পরিশ্রম নেহায়েত কম হয় না। আর সে কারণে সন্ধ্যা থেকে একের পর এক হাই উঠতে থাকে, শরীর ক্লান্ত লাগে। তবে রাতে বিছানায় শুতে গেলে কিছুতেই আর ঘুম আসতে চায় না। এক-আধটা দিন এমন হলে তাও চলতে পারে। তবে দিনের পর দিন এমনটি চলতে থাকলে শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিতেই পারে। তবে অনিদ্রার মতো রোগের পিছনে যে সব সময় মানসিক চাপ কিংবা উদ্বেগের হাত রয়েছে, এমনটি কিন্তু মোটেও নয়। সাধারণ কিছু খাবার, যেগুলো আসলে ঘুমে ব্যাঘাতও ঘটাতে পারে। তাই ওইসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
তাহলে আজ জেনে নিন কোন কোন খাবার খেলে ঘুম আরও দূরে চলে যেতে পারে?
কফি
সারাদিনের ক্লান্তি কাটাতে কফির জুড়ি নেই। তবে এই কফিই বাড়িয়ে দিতে পারে উদ্বেগের সমস্যাগুলো। কারণ হলো এই কফিতে থাকা ক্যাফিন স্নায়ুর কার্যকারিতা আরও শিথিল করে দেয়। সেইসঙ্গে ক্যাফিন রক্তচাপের মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়। উচ্চ রক্তচাপ মানসিক উদ্বেগের একটি অন্যতম বড় কারণও। ক্যাফিন মাত্রেই যে ক্ষতিকর তা অবশ্য নয়। দিনে ৪০০ মিলিগ্রাম ক্যাফিন খেলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথাও নয়। তবে এর বেশি খেলে উদ্বেগ আরও বাড়তে পারে। তাই রাতে ঘুমোনোর আগে কফি না খাওয়াই উত্তম।
ভাজাভুজি
ভাজাভুজি ধরনের খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট। এই ফ্যাট অনিদ্রার সমস্যার একটি অন্যতম কারণ হতে পারে। কারও যদি ঘুম না আসার সমস্যা থেকেই থাকে, সেই ক্ষেত্রে রাতের খাবারে বেশি তেল-মশলা ও ভাজাভুজি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলায় ভালো। এছাড়াও এই ধরনের খাবার উদ্বেগের মাত্রাও আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
মিষ্টি
অনেকে বলে থাকেন যে মনখারাপের দাওয়াই নাকি মিষ্টি। মিষ্টি খেলে কারও কারও নাকি মনখারাপ একেবারেই চলে যায়। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সেটি একান্তই ব্যক্তিগত ধারণাও হতে পারে। তবে কেক, পেস্ট্রি কিংবা এই ধরনের খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এক ধাক্কায় এনার্জির মাত্রাও অনেকটা নীচে নেমে যেতে পারে। শর্করার মাত্রা ওঠানামা করায় উদ্বেগও নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যাবে। তাই অনিদ্রার সমস্যা যাদের দীর্ঘদিনের রয়েছে, রাতে তাদের মিষ্টিজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকার জন্য বলেন চিকিৎসকরা।
ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেটের মধ্যেও যথেষ্ট পরিমাণে ক্যাফিন থাকে। রাত ৮টার দিকে ডার্ক চকোলেট খেলে, তারমধ্যে থাকা ক্যাফিনের প্রভাবও থাকতে পারে রাতভর। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, পরিমাণের উপর নজর রাখলে খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথাও নয়।
অতিরিক্ত মশলা ও অ্যাসিড-যুক্ত খাবার
এই ধরনের খাবার রাতে খেলে অনেকেরই গলা-বুক জ্বালা করে। শোয়ার সময় এই ধরনের অস্বস্তি হলে কিছুতেই ঘুম আসতে চাইবে না। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে বেশি করে পানি খেতে পারেন। তবে তাতেও সমস্যা রয়েছে। পানি খেলে বার বার প্রস্রাবের বেগ আসতে পারে। সেজন্যেও আবার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org