দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বসন্তে একবার ভাইরাস ঘটিত অসুখে আক্রান্ত হলে খাওয়া-দাওয়ায় ঠিক মতো নজর না দিলেই হবে মুশকিল। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে চাইলে ডায়েটে কোন কোন খাবার রাখবেন সেটি আজ জেনে নিন।
শীতের শেষে বসন্তের হাত ধরেই বেড়ে যায় ভাইরাসঘটিত সংক্রমণের চোখরাঙানি। বায়ুবাহিত এই অসুখ খুব সহজেই ছড়ায়। তাই সতর্ক থাকতে হবে প্রথম থেকে। এই মৌসুমে এক বার ভাইরাল অসুখে আক্রান্ত হলে খাওয়া-দাওয়ায় ঠিক মতো নজর না দিলেই মুশকিল। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে চাইলে ডায়েটে কোন কোন খাবার রাখতে হবে সেটি আজ জেনে নিন।
সজনে
বসন্তের মৌসুমে সজনে ফুল ও সজনে ডাঁটা খেতে পারেন। এই সময় বায়ুবাহিত নানা অসুখ ঠেকাতে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য সজনে ফুল এবং সজনে ডাঁটা বেশ উপকারী। বাজারে সজনে গুঁড়োও কিনতে পাওয়া যায়, ইচ্ছে করলে গরম পানিতে সেই গুঁড়ো মিশিয়েও চায়ের মতো খেতে পারন।
নিম
আমরা সবাই জানি নিমপাতা এমনিতেই জীবাণুনাশক। এই সময় বেশি করে নিমপাতা খেতেই হবে। নিমপাতা ভাইরাসের সঙ্গে লড়তেও সাহায্য করে। স্বাদে তেতো হলেও এই নিমপাতা রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
টক ফল
টক জাতীয় ফল যেমন- মুসাম্বি, কমলালেবু, পাতিলেবু ডায়েটে বেশি করে রাখতে হবে। এইসব ফলে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
টক দই
আমরা অনেক সময় টক দইকে পাত্তায় দেয় না। কিন্তু এই টক দই টক্সিন দূর করে শরীরকে ভিতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। শরীর ভিতর থেকে টক্সিনমুক্ত থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও এমনিতেই বেড়ে যায়। বসন্তের রোগ ঠেকাতে তাই ভরসা রাখতে পারেন এই ধরনের প্রোবায়োটিক উপাদান যুক্ত খাবারের।
সবুজ শাকসব্জি
সবুজ শাকসব্জিতে রয়েছে মিনারেলস, ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের মতো নানা উপাদান। এগুলো শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সংক্রমণ জাতীয় রোগের ঝুঁকি কমায় এইসব সবুজ শাকসব্জি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org