দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাশিয়ার মস্কোর কনসার্ট হলে হামলা চালানোর মতো সক্ষমতা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) রয়েছে বলে বিশ্বাস করাটা খুবই কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। ২৭ মার্চ তিনি এ কথা বলেছেন।
জাখারোভার দাবি করে বলেছেন, শুক্রবার ক্রোকাস সিটি হলে বন্দুকধারীর হামলার পেছনে ইউক্রেনের হাত রয়েছে।
গত ২২ মার্চ সন্ধ্যায় মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় বন্দুকধারীরা কনসার্ট হলে ঢুকে ভিড়ের মধ্যে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গত ২০ বছরের মধ্যে এটি রাশিয়ায় হওয়া সবচেয়ে একটি প্রাণঘাতী হামলা।
রাশিয়ার জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় ওই হামলার ঘটনায় নিহত ১৪৩ জনের তালিকা ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে। ইতিপূর্বে কর্মকর্তারা নিহতের সংখ্যা ১৩৯ বলে জানিয়েছিলেন।
এদিকে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করেছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, আইএসের আফগান শাখা ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএস-কে) এই হামলা চালিয়েছে বলে তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। ইউক্রেন বারবারই বলে আসছে যে, এই হামলার ঘটনায় তাদের কোনোই সম্পৃক্ততা নেই।
তবে জাখারোভা বলেছেন যে, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন ও কিয়েভকে সমর্থনকারী পশ্চিমা সরকারগুলোর ওপর দোষারোপ এড়াতেই আইএসের ওপর এই দায় চাপাচ্ছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন যে, ইসলামপন্থী জঙ্গিরা এই হামলা চালিয়েছে, তবে এটি ইউক্রেনের স্বার্থে চালানো হয়। তার ধারণা যে, এর পেছনে কিয়েভের ভূমিকাও থাকতে পারে।
পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনীয় পক্ষের কেও কেও বন্দুকধারীদের সীমান্ত অতিক্রম করে পালিয়ে যাওয়ার পথও তৈরি করে দিয়েছিল। তবে বন্দুকধারীরা পালিয়ে যাওয়ার আগেই শুক্রবার রাতে তাদের রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চল থেকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলারুশের নেতা আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেছেন যে, বন্দুকধারীরা শুরুতেই তার দেশে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। তবে তারা যখন বুঝতে পারে বেলারুশ সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তখন তারা পথ পাল্টে ইউক্রেনে যাওয়ার চেষ্টা করে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org