দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজায় বিমান হামলায় নিজ দেশের ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় ইসরায়েলের কাছে ব্যাখ্যা চাইলো পোল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্য।
গত পরশু (সোমবার) গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দাইর আল বালাহ এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় এনজিও ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) ৭ জন কর্মী নিহত হন।
ওই কর্মীদের মধ্যে পোল্যান্ডের ১ জন, যুক্তরাজ্যর ৩ জনসহ অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার এক দ্বৈত নাগরিকও ছিলেন। -খবর বিবিসি এবং আল-জাজিরার।
ডব্লিউসিকে বলছে, দাইর আল বালার একটি গুদাম থেকে চলে যাওয়ার সময় ত্রাণবাহী গাড়িবহরে হামলায় কর্মীরা নিহত হন। তারা সমুদ্রপথে গাজায় আসা ১০০ টনের বেশি খাবার ওই গুদামে রেখে আসতে যান।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্বীকারও করেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী নিরীহ মানুষের ওপরে হামলা করেছে। মঙ্গলবার এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন একটি ঘটনা ঘটে গেছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন যে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাটজের সঙ্গে তার কথাও হয়েছে। তিনি কাটজকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, ত্রাণকর্মী নিহতের এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।
বিবিসি জানিয়েছে, এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ক্যামেরন লেখেন, ইসরায়েলকে জরুরি ভিত্তিতে ব্যাখ্যা দিয়ে বলতে হবে, এমন ঘটনা কীভাবে ঘটলো। মাঠ পর্যায়ে ত্রাণকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
অপরদিকে, এক্সে পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাডোস্লা সিকোরস্কি লিখেছেন যে, আমি ব্যক্তিগতভাবে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ইয়াকভলিভনেকের কাছে জরুরিভাবে ব্যাখ্যা চেয়েছি।
সোমবারের হামলার ঘটনার পর ত্রাণকাজ করা গোষ্ঠীগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে যে, তারা যে কোনও সময়ের চেয়ে এখন তাদের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন যে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। যুদ্ধে এরকম ঘটনা ঘটেই যায়। ইসরায়েল বিষয়টি শেষ পর্যন্ত খতিয়ে দেখবে ও এমন ঘটনা যাতে পূণরায় না ঘটে সেজন্য সবকিছুই করবে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org