দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার দিনকে দিন বাড়ছে। এআই প্রযুক্তিকে আরও বড় পরিসরে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে গবেষণা চালানো হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় এবার নতুন একটি এআই মডেল তৈরি করছেন যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
নতুন এআই মডেলটি যে কোনো ব্যক্তির শারীরিক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে ওই ব্যক্তির হৃদপিণ্ড বৈকল্য কিংবা হার্ট ফেইলিওরসহ হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা শনাক্ত করতে সক্ষম। যে কারণে হার্ট ফেইলিওর ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরা পূর্ব থেকেই সতর্কও হতে পারবেন।
নতুন এই মডেলটির নাম রাখা হয়েছে ‘ফাইন্ড-এইচএফ’। এই বিষয়ে লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ক্রিস গেল জানিয়েছেন যে, নতুন এআই মডেলটি রোগীদের চিকিৎসায় নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। রোগীদের চিকিত্সাবিষয়ক তথ্য ব্যবহার করে হৃদযন্ত্রের প্রাথমিক সমস্যা শনাক্ত করতে সক্ষম এআই মডেলটি। ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন (বিএইচএফ) এর তথ্যমতে, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ হৃদযন্ত্রের সমস্যাতে ভুগছেন।
গবেষকরা এআই প্রশিক্ষণের জন্য ৫ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক রোগীর তথ্য ব্যবহার করেন। এআই মডেলটি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করতে সক্ষম।
লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রমেশ নাদরাজাহ জানিয়েছেন যে, নারী এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। অনেকের হৃদরোগ থাকলেও তা শনাক্ত করতে দেরি হয়। নতুন এআই মডেলটি বেশ শক্তিশালী, তাই এটি হৃদরোগের প্রাথমিক অবস্থা শনাক্তে ব্যবহারের সুযোগও রয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org