দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর যে তথ্য সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছিলো তা নাকচ করে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
তিনি বলেছেন, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনিই প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। তিনিই দলের মনোনীত প্রার্থী। তাকে কেও বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু ব্যক্তির সঙ্গে ফোনকলে এইসব কথা বলেন বাইডেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা নিয়ে উদ্বেগে থাকা ব্যক্তিদের বাইডেন ওই ফোনকলে যুক্ত করেন। এই সময় তিনি বলেন, আমিই এই নির্বাচনে লড়ছি। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌড় থেকে কেও আমাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। আমিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে কোথাও সরে যাচ্ছি না।
গত বৃহস্পতিবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর হতে আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যেতে বাইডেনের ওপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েন তিনি। এদিকে দলের অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে বাইডেন পদত্যাগ করতে পারেন-এমন একটি আলোচনাও উঠে আসে। তবে বুধবার এক প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি নাকচ করে দিলেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জন-পিয়ের। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় বাইডেন পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করবেন কি-না? জবাবে কারিন বলেন, ‘অবশ্যই, না’।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টিভি বিতর্কের পর বাইডেনের জনপ্রিয়তায় ধস নামে। এমনকি তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টির এক-তৃতীয়াংশ মনে করেন যে, নির্বাচনী দৌড় থেকে বাইডেনের সরে দাঁড়ানো উচিত। মঙ্গলবার রয়টার্স/ইপসোস পরিচালিত এই সম্পর্কিত এক জরিপের ফল প্রকাশের পর আসন্ন নির্বাচন থেকে বাইডেনের সরে যাওয়া নিয়ে জোর আলোচনাও শুরু হয়। পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বাইডেনের বিকল্প প্রার্থী কে হতে পারেন তা নিয়েও ইতিমধ্যেই অনেকেই কথা বলছেন।
জরিপে অংশ নেওয়া ডেমোক্র্যাটদের ৩২ শতাংশ মনে করেন, নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে বাইডেনের সরে দাঁড়ানো উচিত। প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে তারা বলেছেন, ওই বিতর্কে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক মিথ্যা বললেও তাকে কোনো চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেননি বাইডেন।
উল্লেখ্য যে, গত বৃহস্পতিবার রাতে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বিতর্কে মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট বাইডেন ছিলেন বেশ নিষ্প্রভ। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাক্যবাণে প্রথম দিকে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন বাইডেন। আর তার পর থেকেই নানা গুঞ্জন শুরু হয় বাইডেনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org