দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কারও কম বয়সে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকরা প্রথমেই জীবনযাপনের ধারা বদলের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপানে রাশ টানা ও শরীরচর্চা জরুরি। কোন পথে বশে থাকবে রক্তচাপ? আজ জেনে নিন সেটি।
উচ্চ রক্তচাপ অনেক সময় নিঃশব্দে বিপদও ডেকে আনতে পারে। কমবয়সিদের মধ্যেও সাম্প্রতিক সময় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। অনেক সময়ই হার্ট অ্যাটাকের নেপথ্যে খলনায়ক হয়ে ওঠে আচমকা বৃদ্ধি পাওয়া এই রক্তচাপ। তাই সময় থাকতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখাটা দরকার। এই বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। তবে শুধু ওষুধই নয়, রক্তচাপ বশে রাখতে যেমন বাড়তি ওজন কমানোটা জরুরি, তেমনি খাদ্যাভ্যাস থেকে জীবনযাপনে শৃঙ্খলাও একটি গুরুত্বপূর্ণ। সেইসঙ্গে প্রয়োজন শরীরর্চা।
হাঁটা
সকালই হোক বা সন্ধেই হোক, হাঁটার কোনই বিকল্প নেই। হাঁটহাটিতে শরীর এবং মন দুই-ই ভালো থাকে। ‘হাইপারটেনশন’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে যে, প্রতিদিন মাঝারি গতিতে আধা ঘণ্টা হাঁটলেই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
যোগব্যায়াম করা
সকালের দিকে অন্ততপক্ষে এক ঘণ্টা হাঁটার পাশাপাশি মিনিট ১৫ যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১২ সপ্তাহ বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করার কারণে সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টোলিক প্রেসার কমছে। যোগব্যায়াম উদ্বেগ কমাতেও সাহায্য করে থাকে। উদ্বেগও অনেক সময় রক্তচাপ বৃদ্ধির নেপথ্যে থেকে কাজ করে।
প্রাণায়াম ব্যায়াম
প্রাণায়াম হলো মূলত শ্বাসের ব্যায়াম। গভীরভাবে শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়া। এই সহজ প্রাণায়ামটি যদি দিনে ৫ মিনিট করেন, তাতেও বেশ লাভ হবে। গভীরভাবে শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়ার কারণে স্ট্রেস হরমোনের আধিক্যও কমে। রক্তচাপও তখন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
সাইক্লিং
সাইক্লিং হলো সাঁতারের মতো শরীরচর্চাও উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে। সাইকেল চালালে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। সাঁতারেও সমগ্র শরীরের ব্যায়াম হয়ে যায়।
ওজন নিয়ে ব্যায়াম
ওজন নিয়ে ব্যায়াম করা পেশি গঠনে যেমন সাহায্য করে, ঠিক তেমনি উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে থাকে। জিম প্রশিক্ষকের পরামর্শ মেনে, হালকা ওজন নিয়ে এই ধরনের ব্যায়াম করা যেতেই পারে। এতেও বেশ উপকার পাবেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org