দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা হয়তো অনেকেই জানি হাসার উপকারিতা অনেক। সবসময় গম্ভীর হয়ে না থেকে বরং হাসুন। আর হাসতে হাসতেই জেনে নিন এর সুফল আসলে কতোটা।

হাসি শরীর ও মনের জন্য ভালো থাকে। মানসিক চাপও কমে। হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। চিকিৎসকরা বলেন, হাসির মাধ্যমে মানসিক চাপ কমাতে পারলে হার্টও ভালো থাকে। রক্তচাপও ঠিক থাকে। এমনকি এও দেখা গিয়েছে, দিনে যদি ১০ মিনিটও কেও মন খুলে হাসেন, তাহলে যে কোনও স্নায়বিক সমস্যা দূর হয়ে যেতে পারে। এখন চারদিকে গজিয়ে উঠেছে লাফিং ক্লাব। সেখানে হাসির ব্যায়ামের পাশাপাশি প্রাণায়াম, ধ্যানও শেখানো হয়ে থাকে। প্রাণখোলা হাসিতেই অনেক শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা প্রতিকারের চেষ্টাও করা হয়। আজ হাসতে হাসতেই জেনে নিন এর সুফল ঠিক কতটা।
হাসি মনের চাপ কমায়
প্রাণখোলা হাসি মানসিক চাপ, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা একেবারে কমিয়ে দেয়। জীবনে এখন হাজারটা চিন্তা থাকে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে মনের উপর চাপ আরও বাড়ছে দিনকে দিন। সংসার এবং পেশাগত জীবনে উদ্বেগের যেনো শেষ নেই। এমন পরিস্থিতিতে মন ভাল রাখাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, হাসলে ‘স্ট্রেস হরমোন’ কর্টিসোল এবং এপিনেফ্রিনের ক্ষরণ কমে যায়। পরিবর্তে সুখী হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। যে কারণে মানসিক চাপ স্বাভাবিক নিয়মেই কমে যায়।
বাড়ে অক্সিজেনের মাত্রা
হাসি হলো এমন এক ধরনের ব্যায়াম, যা শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা আরও বাড়ায়। শরীরের কোষ এবং কলাগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে। বিশেষ করে ফুসফুস এবং হার্টে অক্সিজেন সরবরাহ হয়। ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিকঠাক থাকলে শ্বাসের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।
ব্যথা-বেদনা কমাতে
গবেষণা বলছে যে, হাসলে এন্ডরফিনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা পেশির শক্তি বাড়াতেও পারে। এন্ডরফিনের ক্ষরণ বাড়লে সহ্যশক্তিও বাড়ে, গাঁটে গাঁটে ব্যথাবেদনাও কমে, মানসিক চাপ কমে যায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে
হাসলে হার্টে রক্ত এবং অক্সিজেন চলাচল সঠিক নিয়মেই হবে। হৃদপেশিগুলোর ব্যায়ামও হবে। যে কারণে হার্টের রোগের ঝুঁকিও অনেক কমে যাবে। রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ওজন কমাতে
চিকিৎসকদের মত অনুযায়ী জানা যায়, প্রতিদিন ১০ হতে ১৫ মিনিট যদি আপনি হাসেন তাহলে ৪০ ক্যালোরি অবধি পুড়তে পারে। শারীরিক কসরতে পোড়ার তুলনায় এই ক্যালোরি কমার পরিমান হয়তো অনেকটা কম, তবে অন্য উপকারগুলো পাওয়ার জন্য মুখে হাসি থাকা ভীষণ দরকার। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org