দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ দাসকে কুপিয়ে হত্যার ভিডিও ফুটেজ আদালতে প্রদর্শন করা হবে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিশ্বজিৎ দাস হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতার এই তথ্য-প্রমাণ।
গতকাল আদালত ও তদন্ত সূত্রে সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া বিভিন্ন সূত্র জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর তাজুল ইসলামের সাক্ষ্য প্রদানের মধ্য দিয়ে ৩১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আজ গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ ও তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের পর শেষ সাক্ষী হিসেবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করবেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা এবং আগামীকাল বুধবার আসামি পক্ষের সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে। এরপর শুরু হবে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি-তর্ক। ২ কার্য দিবসে উভয় পক্ষের যুক্তি-তর্ক সম্পন্ন হওয়ার পরই রায় ঘোষণার দিনক্ষণ নির্ধারিত হবে।
সূত্রমতে, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড অনেকেই প্রত্যক্ষ করেছেন। এর মধ্যে রিকশাচালক রিপন সর্দার, ইনসেনটিভ ডেন্টাল ক্লিনিকের পরিচ্ছন্ন কর্মী পার্বতী হাওলাদার ও ঘটনাস্থলের পাশে ভিক্টোরিয়া পার্ক সংলগ্ন ফুটপাথের তেহারি বিক্রেতা আজিজুল হাকিম এই হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হয়েছেন। পরিচ্ছন্নকর্মী পার্বতী হাওলাদার আদালতের কাছে বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি দ্বিতীয় তলায় ছিলেন। পানি আনার জন্য নিচে নেমেছিলেন। এরই মধ্যে মারামারি শুরু হয়ে গেলে তিনি আর ভেতরে যেতে পারেননি। হত্যাকাণ্ডের পর ইনসেনটিভ ক্লিনিকের বিভিন্ন জায়গায় লেগে থাকা ছোপ ছোপ রক্ত পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করেছিলেন তিনি। তেহারি বিক্রেতা আজিজুল হাকিম ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় ভিক্টোরিয়া পার্কের উত্তর পাশে ডাস্টবিনে কাজ করছিলেন স্বপন মিয়া। তিনি আদালতের কাছে ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। এর বাইরে ঘটনাস্থলের আশপাশের চায়ের দোকানদার হায়দার আলী, বিশ্বজিতের ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক ডা. মাকসুদ আদালতে তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন। পরোক্ষ সাক্ষী হিসেবে বিশ্বজিতের ঘনিষ্ঠ স্বজন উত্তম, উত্তমের চাচাতো ভাই উৎপল ও রবিন দাস নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা করেছেন আদালতের কাছে।
উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর ১৮দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের কাছে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎকে। এ ঘটনায় জড়িত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২১ জনকে শনাক্ত করে ৮ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে চাপাতি শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ ও রাশেদুজ্জামান শাওন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। গত ৫ই মার্চ বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের ২ মাস ২৪ দিন পর ২১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে ডিবি পুলিশ।