দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সবাই জানি হার্ট আমাদের শরীরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। তাই এই অঙ্গকে সুস্থ-সবল রাখতে হবে। সেই কাজে আপনার হাতের পাঁচ হতে পারে পেঁয়াজ।
এমন একটা সময় ছিল যখন একটু বেশি বয়সেই তাড়া করতো হার্টের অসুখ। তবে আজকাল সেই ধারা কিন্তু বজায় নেই। এখন তো বয়স ৩০ পেরুলেই বিপদে ফেলছে হৃদরোগ। এমনকী এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। তাই কম বয়স হতেই হার্টের স্বাস্থ্য নিয়ে সাবধান হতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হার্টের ভয়াবহ সব রোগের ফাঁদ এড়িয়ে চলতে চাইলে আপনাকে প্রথমেই ফাস্টফুড খাওয়া ছাড়তে হবে। খাওয়া চলবে না ঘি বা মাখন। তার বদলে শাক, সবজি ও ফলমুল বেশি পরিমাণে খেতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে সেবন করতে হবে পেঁয়াজ। তাতেই উপকার পাওয়া যাবে একেবারে হাতেনাতে।
ফিরবে হার্টের হাল
এই বিষয়ে হেলথলাইন জানাচ্ছে, এই ভেষজতে এমন কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে ট্রাইগ্লিসারাইডস ও কোলেস্টেরল লেভেলকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। যে কারণে সুস্থ থাকে হার্ট। শুধু তা-ই নয়, এতে মজুত কুয়েরসেটিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আবার ব্লাড প্রেশার কমাতেও সাহায্য করে। সেই সুবাদে কাছে ঘেঁষতে পারে না হার্টের অসুখ। তাই সুস্থ থাকতে নিয়মিতভাবে এই ভেষজ সেবন করতে হবে।
কীভাবে খাবেন?
আপনি রান্নায় যেমন পেঁয়াজ ব্যবহার করছিলেন সেটি চালিয়ে যান। সেইসঙ্গে ভাতের পাতে কাঁচা পেঁয়াজও খেতে পারেন। কিংবা স্যালাডে শসার সঙ্গে যুক্ত করুন এই ভেষজটি। এরপর টুক করে খেয়ে নিন। আশা করা যায়, এই নিয়মটি মেনে চললে হার্টের হাল ফিরবে। দূরে থাকবে শরীরের একাধিক জটিল অসুখ।
তবে শুধু হার্টের অসুখ প্রতিরোধ নয়, সেইসঙ্গে একাধিক জটিল রোগকে বশে রাখে এই পেঁয়াজ। আর কি কি উপকার পাবেন?
ক্যান্সারের শত্রু
একবার ক্যান্সার পিছু নিলে জীবন নিয়ে তখন টানাটানি শুরু হয়ে যায়। তাই যেভাবেই হোক এই ঘাতক রোগ থেকে দূরে থাকতে হবে। সেই কাজেও আপনাকে সাহায্য করতে পারে এই পেঁয়াজ। আসলে এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এই কাজে সাহায্য করে বলেও মনে করছেন পুষ্টিবিজ্ঞানীরা। তাই এই ক্যান্সারের মতো ভয়াল রোগ হতে দূরে থাকতে চাইলে নিয়মিত এই ভেষজ সেবন করতে ভুলবেন না কখনও।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে
ডায়াবেটিসের মতো জটিল অসুখকে বশে রাখতে চাইলে নিয়ম করে খাওয়া-দাওয়া ও নিজের ওষুধ খেতে হবে। সেইসঙ্গে ডায়েট থেকে বাদ দিতে হবে তেল, মশলা, ঘি, মিষ্টি, লবণ সমৃদ্ধ খাবারসমূহ। এর বদলে শাক-সবজি খাওয়া বাড়ান। সেইসঙ্গে প্রতিদিনের ডায়েটে জায়গা করে দিন পেঁয়াজ। এতেই সুগারকে বশে রাখতে পারবেন। এমনকী যারা প্রিডায়াবেটিস স্তরে রয়েছেন, তারাও ডায়াবেটিসের থেকে দূরে থাকার কাজে কিছুটা এগিয়ে থাকতে পারবেন।
হাড়ের ঘনত্ব বাড়বে
বর্তমান সময়ে বয়স ৩০ পেরলেই হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে। বিশেষত: মহিলাদের মধ্যেই এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। তবে একটি ভালো খবর হলো, যদি আপনি নিয়মিত পেঁয়াজ খেতে পারেন, সেইক্ষেত্রে অনায়াসে হাড়ের জোর বাড়াতে পারবেন। কারণ হলো, এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাবে। যে কারণে অস্টিওপোরোসিসের মতো সমস্যা আর কাছে ঘেঁষে না। উল্টো বাড়বে হাড়ের ঘনত্ব। তবে সাবধনতা হলো এই প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org