দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শর্ত মেনে চলতে গিয়ে আমরা অনেকেই কর্নফ্লেক্সকে আপন করে নেই সকালের খাবার হিসাবে। বানানো সহজ হওয়ায় এই খাবারের প্রতি ঝোঁকও তৈরি হওয়াও স্বাভাবিক। তবে সকালে কর্নফ্লেক্স খাওয়া কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?
সারাদিনের খাবারগুলোর মধ্যে সকালের খাবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এমনটিই মত পুষ্টিবিদদের। তবে সকালের অফিস বের হওয়ার সময় তাড়ায় অনেকেই বুঝতেই পারেন না কী খাওয়া উচিত। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে অনেক সময়ই অস্বাস্থ্যকর খাবাব-দাবার খাওয়া হয়ে যায়। এতে সারা দিনটাই শারীরিক অস্বস্তিতে কাটতে পারে। এমন অনেক খাবারই রযেছে, যা আপাতদৃষ্টিতে স্বাস্থ্যকর মনে হলেও আদতেও কিন্তু নয়। অনেক বাড়িতে বড় থেকে খুদে সকলেই নিয়মিত দুধ-কর্নফ্লেক্স দিয়ে সকালের খাবার সারেন।
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদদের মতে, বেশিরভাগ প্যাকেটজাত কর্নফ্লেক্সেই ‘হাই ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ’ মেশানো থাকে। তাই কর্নফ্লেক্সের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স উচ্চ পর্যায়েই থাকে। এছাড়াও এই খাবার শুধু খাওয়া যায় না। এতে মেশাতে হয় অন্ততপক্ষে দুধ। অনেকেই শুকনো ফল কিংবা মৌসুমি নানা ফলও এর সঙ্গে মিশিয়ে খান। এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স আরও বেড়ে যায়, যা শক্তি বাড়ালেও শরীরের জন্য বিশেষ একটা সুখকর নয়। এছাড়াও প্যাকেটজাত কর্নফ্লেক্সে অ্যাডেড সুগারও থাকে, যা কেবল মাত্র ক্ষতিকারকই নয়, মেদবৃদ্ধিতেও বিশেষ কার্যকর ভূমিকা রাখে। তাই মেদ সরাতে যে খাবার আপনি খাচ্ছেন, তার হাত ধরেই ঢুকে পড়ছে শরীরে ওবেসিটির বিষ এবং রক্তে বাড়ছে শর্করার পরিমাণ। সেইসঙ্গে কর্নফ্লেক্সে ক্যালোরির মাত্রাও বেশি থাকে।
সে কারণে প্রতিদিন কর্নফ্লেক্স কিংবা অন্য কোনও সিরিয়াল ফুডের অভ্যাস থাকলে তা বদলে ফেলুন। বরং হাতরুটি, ওট্স, মিলেট প্রয়োজনে নানা সব্জির স্যালাড, ডিমের উপরেও ভরসা রাখতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org