দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ‘রিভিউ’ প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে এক গবেষণা। সেখানে সবিস্তার বলা হয়েছে যে, কীভাবে অধিক উচ্চতায় অক্সিজেনের অভাব পুরুষের জননাঙ্গের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

অনেকেই পাহাড়ের ডাকে সাড়া দিয়ে অ্যাডভেঞ্চারের টানে বেরিয়ে পরেন। চড়াই-উতরাই পেরিয়ে পাহাড়ের মাথা ছোঁয়ার যে নেশা, তা এড়ানো খুব সোজা কথা নয়। তবে একটি গবেষণায় প্রকাশিত ফল বলছে যে, অধিক উচ্চতায়, যেখানে অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকে, সেখানে ট্রেকিং করলে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যেতে পারে! এমনকি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা সন্তানের মধ্যেও ওই ধরনের সমস্যা সঞ্চারিত হতে পারে!
নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ‘রিভিউ’ প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় ওই গবেষণাটি। সেখানে সবিস্তার বলা হয়েছে যে, কীভাবে অধিক উচ্চতায় অক্সিজেনের অভাব পুরুষের জননাঙ্গের উপর বেশ প্রভাব ফেলে। গবেষকরা বলেছেন, শরীরে অক্সিজেনের অভাবের কারণে পুরুষের অন্ডকোষ কিংবা শুক্রাশয়ে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। ওই সমস্যাকে বলা হয়ে থাকে ‘টেস্টিস হাইপক্সিয়া’। যা শুক্রাণুর মানকে আরও প্রভাবিত করে। পুরুষের সার্বিক প্রজনন ক্ষমতাও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বলা হয়েছে যে, সাধারণভাবে ১২ মাস নিয়মিত অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গের পরও যদি পুরুষ তার মহিলা সঙ্গীর গর্ভে সন্তান জন্ম দিতে না পারেন, তাহলে তাকে বলা হয় প্রজননে অক্ষমতা কিংবা ইনফার্টিলিটি। তবে যদি পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা কমেই যায়, তবে ওই একই পরিস্থিতিতে সন্তান জন্ম দেওয়া অসম্ভব না হলেও সম্ভাবনা অনেকটা কম হবে। ওই পরিস্থিতিকে বলা হয়, সাব ফার্টিলিটি।
নেচার পত্রিকায় যে গবেষণার ‘রিভিউ’ প্রকাশিত হয় সেটি করেছেন অস্ট্রেলিয়ার নিউকাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। প্রতিবেদনটি লিখেছেন সেই গবেষক দলেরই অন্যতম প্রধান তথা নিউ কাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও প্রজনন বিজ্ঞানী টেসা লর্ড। টেসা লর্ড বলেছেন, বেশ কিছু শারীরিক কারণেও শুক্রাশয়ে অক্সিজেন পৌঁছানোর সমস্যা হতেই পারে। টেসার ভাষায়, ‘‘স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো কোনও রোগ থাকলে কিংবা পুরুষের শুক্রাশয়ের যে বহিরাবরণ তার শিরা প্রসারিত হলেও অনেক সময় টেস্টিস হাইপক্সিয়া হতে পারে।’’
শুক্রাশয়ের শিরা প্রসারিত হওয়ার সমস্যার একটি নামও রয়েছে। ভারিকোসেল। টেসা আরও জানিয়েছেন, পুরুষের প্রজননের অক্ষমতার প্রতি ১০০টি ঘটনার মধ্যে ৪৫টির কারণই ওই ভারিকোসেল থেকে হওয়া ‘টেস্টিস হাইপক্সিয়া’। আবার যাদের স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে, অর্থাৎ ঘুমানোর সময় যাদের গলার পেশি সঙ্কুচিত হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা সৃষ্টি করে, তাদেরও রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে ‘টেস্টিস হাইপক্সিয়া’ও হতে পারে। বিশেষ করে যাদের স্থূলত্ব বেশি, তাদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার ঝুঁকিও বাড়তে দেখা গেছে গবেষণায়। এ ছাড়াও অধিক উচ্চতায় শরীরে অক্সিজেনের অভাব হলেও ‘টেস্টিস হাইপক্সিয়া’ হয় বলে জানিয়েছেন টেসা লর্ড। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org